ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় তরুণীর উপর নির্যাতনের ঘটনা নতুন নয়। মাঝেমধ্যেই শিরোনামে জায়গা করে নেয় এই ধরনের ঘটনা। তবে বিয়ের প্রস্তাব ফেরানোয় প্রেমিকের উপর পালটা হামলার ঘটনা বিরল। এমনই ব্যতিক্রমী ঘটনার সাক্ষী কাটোয়ার (Katwa) সার্কাস ময়দান। বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় প্রেমিককে লক্ষ্য করে গুলি চালাল নাবালিকা। এই প্রেমিকের সঙ্গে ৩-৪ বছর ধরে সম্পর্ক ছিল নাবালিকার। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করে সে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ ওই নাবালিকাকে আটক করেছে। কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল সে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম লালচাঁদ শেখ। কাটোয়া কেশিয়া মাঠপাড়ার বাসিন্দা তিনি। বছর একুশের লালচাঁদ পেশায় রং মিস্ত্রি। গত ৩-৪ বছর যাবৎ স্থানীয় বাগানেপাড়ার বাসিন্দা এক নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাঁর। দুই পরিবারই সম্পর্কের কথা জানত। সাবির এবং ওই নাবালিকার যে বিয়ে হবে, তা মোটামুটি দুই বাড়ি থেকে ঠিকঠাকও ছিল। ইতিমধ্যেই কর্মসূত্রে ঝাড়খণ্ডে চলে যান নাবালিকা। সেই সময় যদিও দু’জনের যোগাযোগ ছিল। ফোনে কথা হত নিয়মিত। তবে ঝাড়খণ্ড থেকে ফেরার পর থেকেই লালচাঁদ এবং ওই নাবালিকার সম্পর্কের অবনতি হয়।
[আরও পড়ুন: প্রেমের প্রস্তাব ফেরানোর ‘শাস্তি’, স্বামীর অনুপস্থিতিতে বধূর ঠোঁটে কামড় যুবকের]
মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ড থেকে কাটোয়ার বাগানেপাড়ায় নিজের বাড়িতে ফেরে নাবালিকা। প্রেমিক লালচাঁদ শেখের দাবি, ওই নাবালিকা বুধবার সন্ধেয় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চায়। সার্কাস পাড়ায় দু’জনে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো নির্দিষ্ট সময় দু’জনেই সার্কাস পাড়ায় চলে আসে। দেখা হওয়ার পর প্রেমিকা তাঁকে চুম্বন করে বলেই দাবি যুবকের। ধূমপান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করে নাবালিকা। সেই মতো সিগারেট কিনে আনতে বলে তাকে। কিনেও আনে সে। সিগারেট জ্বালানোর সময়ই বিপত্তি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নাবালিকা তার পেটের কাছে গুলি চালায় বলেই অভিযোগ যুবকের।
গুলির শব্দ কানে যায় স্থানীয়দের। তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওই যুবক। ততক্ষণে অবশ্য ওই নাবালিকা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়। লালচাঁদকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তবে তার শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। এদিকে, প্রেমিককে গুলি চালানোর পরই বাড়ি ফিরে আসে নাবালিকা। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করে সে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ তাকে আটক করে। নাবালিকাকে জেরা করে এই ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।