বাবুল হক, মালদহ: কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধ! টানা দুবছর ধরে চলত অকথ্য অত্যাচার। তাতেও আশ মেটেনি শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের। এবার গৃহবধূকে পিটিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়াল মালদদের হরিশ্চন্দ্রপুরে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। তাদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রাম-পঞ্চায়েতের বাগমারি গ্রামের বাসিন্দা ২৪ বছরের রুকসেবা খাতুন। তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচলা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মান্নানের। তাঁদের ২ বছরের মেয়ে রয়েছে। আর এই সন্তানকে ঘিরেই অশান্তি। স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের আশা ছিল, রুকসেবার কোল আলো করে আসবে তাদের বংশধর। মেয়ে নয়, ছেলে হবে। কিন্তু তাদের আশাপূরণ না হওয়ায় সমস্যার শুরু।
[আরও পড়ুন: দাবি মতো টাকা না মেলায় আড়াই ঘণ্টা ‘অত্যাচার’ বৃহন্নলার, প্রাণ গেল সদ্যোজাতের]
অভিযোগ, কন্যাসন্তান প্রসবের পর থেকেই তীব্র অত্যাচার চলত রুকসেবার উপর। বারবার প্রতিবাদ জানিয়েও লাভ হয়নি। এই নির্যাতন থামাতে গ্রামের মোড়ল মাতব্বর থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরা গ্রামে সালিসি সভাও বসিয়েছিল। জরিমানাও করা হয়। এমনকী, বড় শাস্তি হুমকিও দেওয়া হয়েছিল আবদুলের পরিবারকে। তবুও বাঁচানো গেল না রুকসেবাকে। রুকসেবার পরিবারের অভিযোগ, পিটিয়ে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে রুকসেবাকে।
এদিন সকালে ফোন করে মেয়ে রুকসেবাকে পাননি বাবা রেজাউল আলি। উদবিগ্ন হয়ে ছুটে গিয়ে দেখেন মেয়ের ঝুলন্ত দেহ। শোকার্ত অবস্থায় তিনি থানায় ছুটে যান। অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পলাতক রুকসেবার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাসুর এবং জা।