শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল আগেই। স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলেও আসেন তরুণী। তার পরেও স্বামীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পাননি। অভিযোগ, স্ত্রীর নগ্ন ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করছেন স্বামী। বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে লাভ হয়নি কিছুই। তাই থানার সামনে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা বধূর। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার জেলা সাইবার ক্রাইম থানাচত্বরে জোর শোরগোল।
তরুণী জানান, বেশ কয়েক বছর আগে মৃত্যুঞ্জয় ঘোষের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। মৃত্যুঞ্জয় পেশায় ব্যবসায়ী। করণদিঘিরর টুঙ্গিদিঘির সাধনপুরের বাসিন্দা। বিয়ের পর কয়েকদিন দিব্যি চলে সংসার। আচমকাই সম্পর্কের অবনতি হয়। দাম্পত্য সম্পর্ক উষ্ণতা হারায়। মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন। বাপের বাড়িতে ফেরার পরেও স্বামীর নির্যাতনের হাত থেকে নিষ্কৃতি মেলেনি বলেই দাবি তাঁর। অভিযোগ, তাঁর নগ্ন ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করেছে স্বামী। অর্থ উপার্জনের লোভে স্বামী এই কাজ করেছে বলেও অভিযোগ। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না বলেই দাবি।
[আরও পড়ুন: শুটআউটে নিহত ভিকি যাদবের ‘ঘনিষ্ঠে’র রহস্যমৃত্যু, ‘আমি খুনে যুক্ত নই’, উদ্ধার সুইসাইড নোট]
তাই গত এপ্রিলে পুলিশের দ্বারস্থ হন তরুণী। প্রথমে অনলাইন এবং পরে অফলাইনে দফায় দফায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশের দরজায় হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। তবে পুলিশ অভিযোগের গুরুত্ব দেয়নি বলেই অভিযোগ। পুলিশের তরফে ওই তরুণীকে নানা অবান্তর প্রশ্ন করা হয়েছে বলেই দাবি। পুলিশ নাকি তাঁকে প্রশ্ন করেছে, “ঘটনা ঘটানোর আগে মনে ছিল না। বিয়েতে নিমন্ত্রণ করেছিলেন?” দিশাহারা হয়ে শুক্রবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার জেলা সাইবার ক্রাইম দপ্তরে সুবিচারের দাবিতে পুলিশ আধিকারিকের সামনেই নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা বধূর৷
তিনি বলেন, “আমার সম্মান নিয়ে ছিনিমিলি খেলছে স্বামী। আমি বাড়ির বাইরে বেরতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে রাতে সাইবার ক্রাইম থানায় এসেছি। সুবিচার চাইছি। অনেক পুলিশ আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছি। কিছুই ব্যবস্থা হয়নি। আত্মসম্মান শেষ হয়ে গিয়েছে। এই জীবন রেখে কী হবে? তাই হাতের শিরা কেটেছি।” তবে এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার বলেন, “আমরা মেয়েটির পাশে আছি। একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে মেয়েটির কাউন্সেলিং করানো হবে। তার পর যা করার আইন অনুযায়ী করা হবে।”