শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: যুগ এগিয়েছে। আধুনিক হচ্ছি আমরা। তবে অশিক্ষার অন্ধকার সরিয়ে এখনও কি সর্বত্র আলোর দেখা মিলেছে? মুর্শিদাবাদের সুতির ঘটনায় আরও একবার সে প্রশ্নই জোরাল হল।
ঠিক কী ঘটেছে? শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সুতির ১ নম্বর ব্লকের বংশবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আলুয়ানির বাসিন্দা আজবালা সরকার নিজের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। আচমকাই কিছু কামড়ানোর ব্যথা পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। ঘুম থেকে উঠে দেখেন তাঁর হাতে সাপে (Snake) কামড়ে দিয়েছে। তখনই পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানান। অভিযোগ, পরিবারের লোকেরা তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। পরিবর্তে নজিপুর ওঝার কাছে নিয়ে যায় তাঁকে।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক ছেলের বিরুদ্ধে আধপেটা খাইয়ে রাখার অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ অসহায় বাবা]
এরপর স্থানীয় ওঝা দীর্ঘক্ষণ ধরে ওই গৃহবধূকে ঝাড়ফুঁক করেন। শুধু তাই নয়, আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠার আশ্বাসও দেয় ওই ওঝা। বাড়ি ফিরে আসেন গৃহবধূ। বাড়ি ফেরার পর কয়েকঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ওই মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। ওঝার পরিবর্তে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মহিলা প্রাণে বেঁচে যেতেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
বুধবার গভীর রাতে ঠিক একই ঘটনার সাক্ষী হয় উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা (Deganga)। বুধবার রাতে নিজের ঘরে ঘুমনোর সময় সাপের কামড়ে জখম হন এক গৃহবধূ। হাসপাতালের পরিবর্তে তাঁকে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। গত জুলাই মাসে দেগঙ্গায় দু’দিনের ব্যবধানে ২ জন কুসংস্কারের বলি হন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই ঘটনার সাক্ষী মুর্শিদাবাদের সুতি। একের পর এক এই ধরনের ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত অনেকেই। কেন গ্রামবাংলায় কুসংস্কার রুখতে সঠিকভাবে প্রচার হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।