সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ে হারিয়ে গিয়েছিল। খুঁজে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন মা। নতুন করে শুরু করেছিলেন জীবন। কিন্তু ওই, কথায় বলে না, বাস্তব গল্পের চেয়েও বেশি বিস্ময়কর। তেমনই হল আমেরিকার বালটিমোরের ওই মহিলার। ‘জীবন গিয়েছে চ’লে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার–/ তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার-আমার।’ দেখা হল এত বছরের হারিয়ে যাওয়া মেয়ের সঙ্গে। কিন্তু এ কী! মেয়েকে দেখে তো চিনতেই পারছেন না মা।
সিন্থিয়া হাগ। বালটিমোরের বাসিন্দা। ছোট মেয়ে ক্রিস্টাল তখন সদ্য কিশোরী, বয়স মাত্র ১৪। আচমকাই চলে গিয়েছিল বাড়ি ছেড়ে। ফিরিয়ে আনতে কম কাঠখড় পোড়াননি সিন্থিয়া। বড় মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিম বালটিমোর চষে ফেলেছেন। চলে গিয়েছেন নিউইয়র্ক। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ক্রিস্টালের হদিশ কেউ দিতে পারেনি। এভাবেই কেটে গিয়েছে কুড়ি-কুড়ি বছর। হঠাৎ একদিন ফোনের ওপার থেকে কেউ বলল, ‘আমি ক্রিস্টাল, বাড়ি ফিরছি।’ শুনে তো নিজের কানকেই কিছুক্ষণ বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সিন্থিয়া। মেয়েই কি ফোন করল? সংশয় ছিল তীব্র।
গণতন্ত্রের জয়, কুকুরকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হল ছাগল!
কিন্তু ফোনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রেখে মেয়ে ফিরল। চুল ছোট হয়ে গিয়েছে, চোখের কোণা কুঁচকে গিয়েছে। সেদিনের চতুর্দশী আজ ৩৫। সাবলীল ইংরাজির জায়গায় গড়গড় করে স্প্যানিশ বলছে ক্রিস্টাল। কী করেই বা নিশ্চিত হবেন সিন্থিয়া যে ফিরে আসা মেয়েই তাঁর সেই হারিয়ে যাওয়া সন্তান? শেষে মেয়ের ঝকঝকে, দুধসাদা দাঁত আর উজ্জ্বল হাসি দেখে নিশ্চিত হলেন, এ-ই তো তাঁর ‘সুইট, প্রিটি গার্ল।’ কিন্তু তারপরই মায়ের মনে সন্দেহ জাগে, মেয়ে এত দিন ছিল কোথায়? কীভাবে ছিল? সবচেয়ে বড় সংশয় দেখা দেয়, মেয়ে ঠিক আছে তো? এরপর খোঁজখবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন, মেয়ে এতদিন আমেরিকারই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আশ্রমে ছিল। সেখানেই পড়াশোনা করেছে। স্প্যানিশ শিখেছে। বিয়ে করেছে, এমনকী চার সন্তানের মা-ও হয়েছে। কুড়ি বছর সময় যে এত কিছু বদলে যেতে পারে, তা ভাবতেই পারছেন না সিন্থিয়া। তাঁর কাছে যেন ছোট মেয়ে ছোটই আছে।
সমঝোতা এক্সপ্রেসই গাঁথল একসূত্রে, পাক কন্যাকে বিয়ে ভারতীয় যুবকের
ক্রিস্টালের প্রতিক্রিয়া অবশ্য একেবারে অন্যরকম। দু’দশক পর বাড়ি ফেরার পর কারণ হিসেবে তিনি জানাচ্ছেন অন্য কথা। মোটেই মায়ের কাছে ফিরতে চাননি বছর ছত্রিশের ক্রিস্টাল। কারণ, শৈশব, কৈশোরে একাধিকবার কর্মরত মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগে প্রতিবেশীর লাগাতার যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। বালটিমোরের ওই বাড়িতে তাঁর ছোট থেকে বড় হওয়ার দিনগুলো মোটেই সুখের ছিল না। কিন্তু আজকাল তাঁর সন্তানরা মায়ের বাড়ির কথা জানতে চায়। পরিচিত হতে চায় দাদু, দিদাদের সঙ্গে। তাই কিছুটা অনিচ্ছা নিয়েই ফিরেছেন তিনি। কিন্তু বেশিদিন থাকবেন না বলেও জানিয়েছে ক্রিস্টাল। কত ঘটনাই না ঘটে দুনিয়াজুড়ে!
The post অনিচ্ছা, সন্তানদের চাপে ২০ বছর পর মায়ের কাছে ফিরল মেয়ে appeared first on Sangbad Pratidin.