সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতবছর কোভিডে (COVID-19) হারিয়েছিলেন একমাত্র সন্তানকে। ছেলের মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিনই ফের মা হলেন তিনি। জন্ম দিলেন পুত্র সন্তানের। তবে কি সেই ছেলেই আবার ফিরে এল মায়ের কাছে? বছর তিপান্নর মহিলা প্রয়াত সন্তানকেই ফিরে পেতে চেয়েছিলেন। তাঁকে কাছে পাওয়ার জন্যই চেষ্টা করেছিলেন। পুত্রের মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন তাঁর কোল আলো করে এল পুত্রসন্তান। মায়ের মনোবাঞ্ছাই যেন পূরণ হল। সেই মহিলা জানিয়েছেন, নবজাতকের নাম রাখবেন মৃত ছেলের নামেই।
ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) নাগপুরে। কোভিডের সর্বগ্রাসী দ্বিতীয় ঢেউ আরও অনেকের মতোই কেড়ে নিয়েছিল মন্দাকিনী মাঙ্কের ছেলেকে। মাত্র সাতাশ বছর বয়সে মারা যান মন্দাকিনীর ছেলে অক্ষয়। যার অর্থ চিরস্থায়ী, যার কোনও ক্ষয় নেই। করোনার দাপটে সেই অক্ষয়ই চলে গেলেন বহুদূরে। যেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসে না। সন্তান হারানোর শোক সামলে উঠতে পারেননি মন্দাকিনী। শোকস্তব্ধ মন্দাকিনী স্থির করেন ফের মা হবেন। ফিরিয়ে আনবেন প্রয়াত সন্তানকে। কিন্তু সেই সময় তাঁর বয়স ৫২ বছর! এই বয়সে মা হওয়া কি আদৌ সম্ভব? তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। মা (Woman at 53 become mother) হওয়ার জন্য চিকিৎসা শুরু করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘রামচন্দ্র ভগবান নন’, বিজেপির জোটসঙ্গীর মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড়, সতর্ক করল গেরুয়া শিবির]
গত ১৫ এপ্রিল সন্তান হারানোর পর পরই আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার চিকিৎসা শুরু করেন মন্দাকিনী। ২০২১ সালের জুলাই মাসে অন্তঃসত্ত্বা হন মন্দাকিনী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, “আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং ওষুধের কারণেই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু তার থেকেও বেশি কৃতিত্ব মন্দাকিনীর। তাঁর ইচ্ছাশক্তি এবং নিষ্ঠার কারণেই সন্তানটি সুস্থ ভাবে পৃথিবীর আলো দেখতে পেয়েছে।
সংগীতা তাজপুরিয়া নামে এক চিকিৎসক গোটা প্রক্রিয়াটি তত্ত্বাবধান করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “মন্দাকিনী যে কোনও ধরনের ট্রিটমেন্টের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমাদের সৌভাগ্য, তাঁর শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল, তাই আমরা পরদিন থেকেই চিকিৎসা শুরু করে দিই।” যদিও চিকিৎসকেরা চেয়েছিলেন স্বাভাবিক ভাবেই সন্তান জন্মের প্রক্রিয়া হোক, কিন্তু মন্দাকিনী চেয়েছিলেন যেন ১৫ এপ্রিলের আগেই তাঁর কোলে আসে সন্তান। সেই মতোই আইভিএফ পদ্ধতি শুরু হয়। অবশেষে, ১৪ এপ্রিল জন্ম নেয় ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মন্দাকিনীর মায়ের বয়স ৭৮ বছর। তিনি সদ্যোজাত নাতির মুখ দেখে বলেছেন, তাঁর মৃত নাতি অক্ষয়ের মতোই দেখতে হয়েছে নবজাতক। আত্মীয়রা বলছেন, মন্দাকিনীর কাছেই ফিরে এল অক্ষয়।
[আরও পড়ুন: অসামান্য পরিষেবা, কেন্দ্রের বিচারে দ্বিতীয় স্থানে বাংলার টেলি মেডিসিন]