সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিডের (COVID-19) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও একধাপ এগোল ব্রিটেন। শুরু হল গণ টিকাকারণ। সেই প্রক্রিয়ায় ফাইজারের (Pfizer) প্রতিষেধক প্রথম গ্রহণ করলেন এক নবতিপর বৃদ্ধা। ব্রিটেনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ তিনি ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন।
ভ্যাকসিন (Vaccine) গ্রহণের পর আপাতত কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সুস্থই রয়েছেন মধ্য ব্রিটেন নিবাসী মার্গারেট কেনান। আর এক সপ্তাহ পরেই তাঁর একানব্বইতম জন্মদিন। সেই জন্মদিনের আগে এই প্রক্রিয়ায় অংশ হতে পেরে আপ্লুত তিনি। বলছেন, “কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন সবার প্রথমে নিতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে হচ্ছে।” উল্লেখ্য, এদিন সকালে মধ্য ব্রিটেনের কোভেন্ট্রি হাসপাতালে তিনি প্রতিষেধক নেন।
[আরও পড়ুন : স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত ‘বুদ্ধিমান’ অস্ত্রে হত্যা ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীকে!]
কেনান জানিয়েছেন, “প্রতিদিন খুব ভোরে ওঠা আমার অভ্যাস। সেই অভ্যাসের জন্য এই রেকর্ড গড়তে পারলাম। সকাল ঘুম থেকে উঠেই হাসপাতালে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তখনও জানতাম না, ট্রায়ালের বাইরে আমিই প্রথম এই টিকা নিচ্ছি। পরে অবশ্য রেকর্ড সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এখনও সুস্থই আছি।” জানা গিয়েছে, স্থানীয় হাসপাতালে নার্স মে পার্সনস তাঁকে এই ভ্যাকসিন দেন। সেই নার্সকে ধন্যবাদ জানিয়ে কেনানের পরামর্শ, “যাদের প্রয়োজন তাঁরা ভ্যাকসিন নিন। ৯০ বছর বয়সে আমি এই টিকা নিয়েছি। কোনও সমস্যা হচ্ছে না।”
এদিন ব্রিটেনে প্রথম দফায় করোনা টিকা পাওয়ার কথা ৮৭ বছরের হরি শুক্ল ও তাঁর স্ত্রী ৮৩ বছরের রঞ্জনেরও। হরির পূর্বপুরুষ মুম্বইয়ের বাসিন্দা ছিলেন। হরির বাবা উগান্ডায় চলে যান রেলে চাকরি নিয়ে। ১৯৩৩ সালে সেখানেই জন্ম হরির।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ব্রিটেনে গণ টিকাকরণের ছাড়পত্র পেয়েছে ফাইজার-বায়োএনটেকের সম্ভাব্য কোভিড প্রতিষেধক। বরিস জনসনের সরকার জানিয়েছিল, “স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি অর্গানাইজেশন (MHRA) এই সম্ভাব্য প্রতিষেধক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে ব্রিটিশ সরকারও। আগামী সপ্তাহ থেকেই ব্রিটেনের সর্বত্র এই প্রতিষেধক মিলবে।” যেমন কথা তেমন কাজ। আজ থেকে গণটিকাকরণ শুরু হল ব্রিটেনে।
[আরও পড়ুন : চিনকে চাপে রাখার চেষ্টা! যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে জাপান, আমেরিকা ও ফ্রান্স]
কিন্তু কতটা কার্যকর হবে এই ভ্যাকসিন? কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না তো? এই দোলাচলে এখনও ভুগছেন ওয়াকিবহাল মহল। যদিও ট্রায়ালে ভালই ফল মিলেছে। তবু ভয় যেন কাটতে চাইছে না। যদিও মার্কিন সংস্থা ফাইজারের দাবি, তাদের ভ্যাকসিন ৯৫ শতাংশ কার্যকর। শেষ দফা ট্রায়ালের চূড়ান্ত বিশ্লেষণের পর কোম্পানির দাবি ছিল, তাদের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এখন তাঁদের দাবি কতটা সঠিক, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।