অর্ণব দাস, বারাকপুর: সমকামী সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা। বান্ধবীকে বাড়িতে ডেকে আগুন লাগিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল নাবালিকার বিরুদ্ধে। বারাকপুরের (Barrackpore) আদর্শপল্লির ঘটনায় জোর শোরগোল। নোয়াপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করে নিহতের পরিবার। খুন নাকি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বারাকপুরের আদর্শপল্লির বাসিন্দা চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাবালিকার সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আলাপ হয়। কথাবার্তা চলতে থাকে। একে অপরের বাড়িতে আসা যাওয়া শুরু হয়। উপহার দেওয়া নেওয়াও হয়। কিছুদিনের মধ্যে বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়। চর্চিতার পরিবারের দাবি, নাবালিকাকে ভালবেসে ফেলেছেন বলেই জানান তিনি। নাবালিকাও সেকথাই জানান। প্রথমে চর্চিতার পরিবার সম্পর্ক মানতে চায় না। বারবার বোঝানো হয় তাঁকে। তবে তাতেও সম্পর্ক ছেড়ে বেরতে চাননি চর্চিতা। অবশেষে হাল ছেড়ে দেন চর্চিতার মা। মেয়ের সমকামী সম্পর্ক মেনে নেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বিষ কিনতে গিয়ে দোকানদারের সঙ্গে প্রেম, স্বামীকে তালাক দিয়ে ফের বিয়ের দাবিতে অনশনে বধূ]
চর্চিতার মায়ের দাবি, ইদানীং সম্পর্কে ফাটল ধরেছিল। নাবালিকা দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করেছিল। বাড়িতে আসাযাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিয়েছিল। চর্চিতার মোবাইল নম্বরও ব্লক করে দিত মাঝেমধ্যেই। শুক্রবার সকাল থেকে অশান্তি চরমে পৌঁছয়। সম্পর্ক আর রাখতে চায় না বলেই সাফ জানিয়ে দেয় নাবালিকা। তা নিয়ে বারবার ফোনে নাবালিকা ও চর্চিতার কথা কাটাকাটি হয়। ইতিমধ্যেই চর্চিতার মা এবং দাদা কাজে বেরিয়ে যান। চর্চিতা বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে বের হয়। নাবালিকার বাড়িতে যান।
কাজ থেকে বাড়ি ফিরেও চর্চিতাকে দেখতে না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান চর্চিতার মা এবং দাদা। নাবালিকার বাড়িতে যান তাঁরা। গিয়ে কার্যত হতভম্ব হয়ে যান তাঁরা। কারণ, তাঁরা জানতে পারেন আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে চর্চিতার। নাবালিকার পরিবারের দাবি, ঝগড়াঝাটির পর গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হন চর্চিতা। যদিও আত্মহত্যার তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন নিহতের মা ও দাদা। তাঁদের দাবি, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চর্চিতার চিৎকার চেঁচামেচি কেন শুনতে পেলেন না নাবালিকার প্রতিবেশীরা? পরিকল্পনামাফিক হাত, মুখ বেঁধে তরুণীর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় নোয়াপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। চর্চিতার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সামনে আসার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।