রাজা দাস, বালুরঘাট: মাদুর শিল্পই এখন মহিলাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়ে উঠেছে বালুরঘাটে। ব্লকের জলঘর, দোললা, ডুমোইর, মালঞ্চা এলাকার কয়েকশো পরিবারের মহিলারা মাদুর তৈরির সঙ্গে যুক্ত। পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামের ছাত্রীরা এই কাজে সামিল হয়েছেন। মহিলা স্বনির্ভরতার দিশা দেখানো এই কুটির শিল্পকে তুলে ধরতে উদ্যোগী রাজ্য সরকারও।
সাধারণত মার্চ (March ), এপ্রিল, মে ও জুন(June) মাস পর্যন্ত মাদুরের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। ছোট, মাঝারি এবং বড় মাপের ভিন্ন ধরণের মাদুর প্রতি পিস ৮০ থেকে ২০০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়। গ্রামীণ এলাকায় এই শিল্পের ক্রমোন্নতির কথা জানতে পেরেই উদ্বুদ্ধ জেলা শিল্প দপ্তরও। এলাকায় গিয়ে ওই শিল্পীদের পাশে থাকার সব ধরণের আশ্বাস দিয়েছেন কর্তারা। রাজ্য সরকারের পরিকল্পনাও শিল্পীদের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: চাঁদ নেমেছে হুগলির ঘোষ পরিবারে! উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় যমজ বোন]
কীভাবে চলে মাদুর তৈরির কাজ? প্রথমে চারাগাছ লাগিয়ে কাঁচামাল উৎপাদন করা হচ্ছে। তা শুকিয়ে কাঠি বা শন তৈরি করা হয়। শেষে সেই কাঠিকে সুতোয় গেঁথে তৈরি হয় ভিন্ন মাপের মাদুর। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজটা করছেন মহিলা শিল্পীরাই।
এই কাজে সামিল পিউ দেবনাথ, ভক্তি দেবনাথ, ভানুবালা দেবনাথরা জানান, বাঁশের তৈরি একটি যন্ত্রের মাধ্যমে মাদুর বোনা হয়। পূর্বপুরুষদের দেখেই তাঁরা এই কাজ শিখেছেন। তাঁদের সবার কথায়, কাঁচামালের জন্য আর্থিক ব্যয় কম হলেও পরিশ্রম রয়েছে অনেকটা। সরকারি ঋণ বা উন্নত সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করলে তাঁরা উপকৃত হবেন। পিউরা জানাচ্ছেন, সরকারি লোকজন দেখে গিয়েছেন বটে, কিন্ত কিভাবে এগোলে সরকারি সাহায্য মিলবে তা স্পষ্ট নয়।
জেলা শিল্প দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার স্বপনকুমার প্রামাণিক বলছেন, " আমরা ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে অমৃতখণ্ড, দৌললা এবং মালঞ্চা গ্রামে সার্ভে করেছিলাম। শিল্পীদের জানানো হয়েছিল সরকারি অনুদানের জন্য আমাদের কাছে নাম নথিভুক্ত করতে। আমাদের লক্ষ্য মালঞ্চা গ্রামে একটি ক্লাস্টার তৈরি করা। এখনও সকল শিল্পীরা একসঙ্গে যোগাযোগ করেননি।" তিনি আরও বলেন, "নির্দিষ্ট সংখ্যা না হলে ক্লাস্টার তৈরি করা আমাদের পক্ষে অসুবিধা। আশা করছি মাদুর শিল্পীরা আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসবেন।"