সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছোটপর্দার অনুষ্ঠান সম্প্রচারে নতুন করে ফতোয়া জারি করেছে ইরান (Iran) সরকার। তবে সেই ফতোয়া বেশ অদ্ভুত। বেশ কিছু দৃশ্য দেখানো যাবে না টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেয়েদের পিজ্জা (Pizza) কিংবা স্যান্ডউইচ খাওয়া, পুরুষরা খাবার পরিবেশন করছে-সহ একাধিক দৃশ্যে আপত্তি রয়েছে। এই দৃশ্য সম্প্রচারিত হলে তৎক্ষণাৎ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিল সরকার। অনুষ্ঠান নির্মাতাদের কাছে এই বিজ্ঞপ্তি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে হুঁশিয়ারি, অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সময় তাঁরা যেন এসব বিষয়ে মাথায় রাখেন। অমান্য করলে সঙ্গে সঙ্গে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে।
ইরানের ইব্রাহিম রইসি সরকারের নয়া নিষেধাজ্ঞায় বেশ চিন্তায় পড়েছেন টেলিভিশনের (TV) কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রযোজক, পরিচালকরা। কারণ, এমন কয়েকটি দৃশ্যে কাঁচি পড়তে চলেছে, যে কোনও গল্প নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। ফলে সেসব কাটছাঁট করা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে তাঁদের। ইরান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার (Information and broadcast)বিভাগ থেকে পাঠানো নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, কোনও রেস্তরাঁয় মহিলাদের চা কিংবা অন্য পানীয় পরিবেশন করছে কোনও পুরুষ – এই দৃশ্যে আপত্তি জানানো হয়েছে। এছাড়া মহিলাদের লাল রঙের পানীয় সেবনের দৃশ্যও বাদ পড়ছে সেন্সরের কাঁচিতে। ঘরের মধ্যে পুরুষ-মহিলা চরিত্রকে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থা দেখানো যাবে না। ফতোয়ার তালিকায় রয়েছে আরও বেশ কিছু দৃশ্য। মহিলারা চামড়ার গ্লাভস পরতে পারবেন না। নয়া বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আফগান মসজিদে হামলার দায় স্বীকার করল ISIS, জেহাদের লড়াইয়ে রক্তাক্ত ‘কাবুলিওয়ালার দেশ’]
ইসলামিক দেশগুলির মধ্যে ইরান অন্যতম গোঁড়া। এখানকার ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আল খোমেইনি সর্বোচ্চ ক্ষমতাধারী। প্রশাসনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে তাঁর মতামতের একটা প্রভাব থাকে। তবে নতুন নিষেধাজ্ঞার পিছনে সম্পূর্ণ অন্য কারণ রয়েছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। সম্প্রতি ইরানে টেলিভিশনের এক টক শো’তে সঞ্চালক যে অভিনেত্রীকে নিয়ে অনুষ্ঠান করছিলেন, তাঁর মুখ দেখানো হয়নি ক্যামেরায়। শুধুমাত্র কণ্ঠস্বর শোনানো হয়। গোটা অনুষ্ঠানটিতে আলাপচারিতা চলে এভাবেই। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দর্শকরা।
[আরও পড়ুন: তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছে আমেরিকা! এবার কি জেহাদিদের স্বীকৃতি দেবে ওয়াশিংটন?]
এ নিয়ে ইরানের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা আমিন তারোখ ইনস্টাগ্রাম পোস্ট একগুচ্ছ প্রশ্ন তুলে দেন। তিনি লেখেন, কে ওই অভিনেত্রী, কেমন তাঁর শরীরী ভাষা – এসব না দেখলে একজনকে সম্পূর্ণভাবে চেনা যায় না। তাহলে কেন শুধুমাত্র কণ্ঠস্বর শুনিয়ে টেলিভিশনের ওই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হল? তিনি একজন মহিলা বলেই কি? আমিনের এসব প্রশ্নে কিঞ্চিৎ ‘বিদ্রোহ’-এর আঁচ দেখছে প্রশাসন। আর তারপরই তথ্য-সম্প্রচার বিভাগ একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করে জানিয়ে দিল, টেলিভিশনের মহিলাদের কতটা দেখানো যাবে, আর কতটা যাবে না।