সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঁধভাঙা জলের মতো কাবুলের দিকে এগিয়ে আসছে তালিবান (Taliban)। আফগানিস্তানে শরিয়ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধর্মের নামে পৈশাচিক হত্যালীলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। যুদ্ধজর্জর দেশটিতে চৌত্রিশের অন্তত ১৪টি প্রদেশ দখল করে ফেলেছে জেহাদিরা। এহেন পরিস্থিতিতে জার্মানি সাফ জানিয়ে দিয়েছে বন্দুকের জোরে কাবুলে শরিয়ত প্রতিষ্ঠা করলে আফগানিস্তানকে এক পয়সাও আর্থিক মদত দেওয়া হবে না।
[আরও পড়ুন: COVID vaccine: রক্ত জমাট বাঁধে কোভিশিল্ডে! চাঞ্চল্যকর দাবি ব্রিটেনের গবেষকদের]
২০০১ সালের ৯/১১ হামলার পর ‘মিশন আফগানিস্তান’ শুরু করে মার্কিন ফৌজ। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়রের নেতৃত্বে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে আমেরিকা। আফগান মিলিশিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মাস খানেকের লড়াইয়ের পর তালিবানকে কাবুল থেকে বিতাড়িত করে মার্কিন ফৌজ। কিন্তু তারপর পরিস্থিতি পালটেছে। প্রায় দুই দশক কেটে গেলেও তালিবানের বিনাশ সম্ভব হয়নি। কিন্তু গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটিকে ফের গড়ে তুলতে প্রচুর আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করে ভারত, আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি। পরিকাঠামো নির্মাণে প্রতিবছর আফগানিস্তানকে ৪৩০ মিলিয়ন ইউরো অর্থাৎ ৫০৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে আর্থিক সাহায্য প্রদান করে জার্মানি। কিন্তু দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে জার্মান বিদেশমন্ত্রী হাইকো মাস জানিয়েছেন আফগানিস্তানে শরিয়ত আইন লাগু করলে আর্থিক অনুদান দেওয়া বন্ধ করা হবে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “আমরা প্রতি বছর ৪৩০ মিলিয়ন ইউরো আর্থিক অনুদান দেই। তবে তালিবান যদি জোর করে আফগানিস্তান দখল করে এবং শরিয়ত আইন বলবৎ করে তাহলে আমরা একটি পয়সাও দেব না।” বলে রাখা ভাল, আফগানিস্তানে ন্যাটো জোটে জার্মান সৈনিকরাও ছিল। তবে গত জুন মাসে সে দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে বার্লিন।
এদিকে, তুমুল লড়াইয়ের পর এখনও পর্যন্ত আফগানিস্তানের অন্তত ১৪টি প্রদেশ দখল করেছে তালিবান। সেগুলি হল– শেবেরঘান (জাজওয়ান প্রদেশ), জারাঞ্জ (নিমরুজ প্রদেশ), আইবক সিটি (সামাঙ্গান প্রদেশ), কুন্দুজ শহর (কুন্দুজ প্রদেশ), সর-এ-পুল শহর (সর-এ-পুল প্রদেশ), ফৈজাবাদ (বাদাখশান প্রদেশ), তালুকান (তাখার প্রদেশ), ফারাহ সিটি (ফারাহ প্রদেশ), ফিরুস কহ (ঘোর প্রদেশ), কালা-ই-নও (বাদঘিস প্রদেশ), গজনি সিটি (গজনি প্রদেশ), কান্দাহার (কান্দাহার প্রদেশ), লস্কর গাহ (হেলমন্দ প্রদেশ), হেরাত সিটি (হেরাত প্রদেশ)। সবমিলিয়ে কাবুলের পতন সময়ের অপেক্ষা। সম্প্রতি এক রিপোর্টে পেন্টাগন জানিয়েছে যে আগামী তিন মাসের মধ্যেই কাবুল দখল করে ফেলতে সক্ষম হবে তালিবান। আর তেমনটা হলে আন্তর্জাতিক অনুদান থেকে বঞ্চিত হবে দেশটি। কারণ, অনুদানের অর্থ আসলে তালিবানের ঝুলিতেই যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।