ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ঘরের ছেলে বিরোধী শিবিরে যোগ দিলেও মুকুল রায়কে নিয়ে প্রকাশ্যে কখনওই ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। বরং তাঁর গলায় শোনা গিয়েছে, ‘মুকুল অতটা খারাপ না।’ উলটোদিকেও সৌজন্য বজায় রাখতে দেখা গিয়েছিল মুকুল রায়কেও। গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েও কখনও সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেননি তিনি। তাই মুকুলকে স্বাদরেই স্বাগত জানাল তৃণমূল। কিন্তু সেই মঞ্চেই দলনেত্রী বার্তা দিয়ে রাখলেন, মুকুল রায় ফিরলেও গদ্দারদের দলে ফেরানো হবে না। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকেই এই বার্তা দিলেন মমতা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে মানসিক দূরত্ব বাড়ায় ২০১৭ সালে ঘর বদলে ছিলেন এককালে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তারপর একুশে বিধানসভার আগে তাঁর হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন একাধিক নেতা-নেত্রী। একুশের নির্বাচনী লড়াইতে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তরে দাঁড়িয়ে জেতেনও। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ভরাডুবির পরই বদলে গেল ছবিটা। জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শুক্রবার আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই নতুন পথচলা শুরু করলেন। তবে তাঁকে কোন পদ দেওয়া হবে, তা আলোচনা করে দল সিদ্ধান্ত নেবে বলেই জানান দলনেত্রী। কিন্তু মুকুল রায়কে (Mukul Roy) ফেরানো হয়েছে মানেই যে প্রত্যেক দলত্যাগীর জন্য শাসক শিবিরের দরজা খোলা, তেমনটা নয়। সেকথাই স্পষ্ট করে দিলেন মমতা।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে শুরু থেকেই ‘অস্বস্তি’তে ছিলেন মুকুল, ঘরে ফিরলেন শান্তির খোঁজে!]
নাম না করে মূলত শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশেই যেন বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। যেভাবে তৃণমূল ছাড়ার পর বারবার শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু, নিজের বক্তব্যে অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার করেছেন, তাতে যে মমতা অত্যন্ত অসন্তুষ্ট, তা বুঝিয়েই দিয়েছেন। নন্দীগ্রাম কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ের সময় তুঙ্গে ওঠে শুভেন্দু-মমতা তরজা। যতদিন গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে দূরত্ব। দলত্যাগীদের অনেককেই বারবার ‘গদ্দার’ বলে সম্বোধন করেন মমতা। আর সেই কারণেই মুকুলের ঘরে ফেরার দিন স্পষ্ট বার্তাটি দিয়ে রাখলেন। একুশে তৃণমূলের বিরাট জয়ের পর থেকে যেভাবে দলত্যাগীদের তৃণমূলের ফেরার হিড়িক পড়েছে, তাতে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অর্থাৎ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালী গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাসদের ফেরানোর সম্ভাবনা থাকলেও শুভেন্দুর জন্য শাসক শিবিরের দুয়ার বন্ধ। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।