সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধী শিবিরকে ভোটের মঞ্চে নাস্তানাবুদ করলেও, ঘরের লড়াই মেটানোর কোনও দিশা খুঁজে পাচ্ছে না মহাজুটি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে যখন বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের নাম সামনে আসছে ঠিক সেই সময় বিতর্ক আরও বাড়িয়ে দিলেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে। ইশারায় বুঝিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদ কোনওভাবেই ছাড়তে নারাজ তিনি। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, 'মহারাষ্ট্রের মানুষ আমাকেই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চান।'
রবিবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একনাথ শিণ্ডে বলেন, "আমি মানুষের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম। এমনকি আমি সর্বদা বলে এসেছি আমি শুধু মুখ্যমন্ত্রী নই, বরং 'কমন ম্যান' হয়ে কাজ করেছি। সাধারণ মানুষের সমব্যাথী হয়ে তাঁদের সমস্যা ও কষ্ট দূর করার চেষ্টা করেছি। যেহেতু সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে তাঁদের একজন হয়ে আমি কাজ করেছি তাই স্বাভাবিইকভাবে মানুষ মনে করেন আমারই মুখ্যমন্ত্রী পদে বসা উচিৎ।'' শিণ্ডের এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই জলঘোলা হতে শুরু করেছে মারাঠা রাজনীতিতে। মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝে দাঁড়িয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি পেশ না করলেও রাজনৈতিক মহলের দাবি, এই বার্তার মাধ্যমে শিণ্ডে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী পদের যোগ্য দাবিদার তিনিই।
মহারাষ্ট্রে শাসক জোট ‘মহাজুটি’ চমকে দেওয়া জয় পেয়েছে বিধানসভা ভোটে। ২৮৮ বিধানসভার মধ্যে ২৩০টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি-শিব সেনা (একনাথ শিণ্ডে)-এনসিপি (অজিত পওয়ার) জোট। একাই ১৩২টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। শিব সেনা পেয়েছে ৫৭টি আসন, এনসিপির ঝুলিতে এসেছে ৪১ আসন। যদিও এর পর মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে ধোঁয়াশা। মহাজুটির জয়ের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। দু’দফায় দিন বদলের পর অবশেষে আগামী ৫ ডিসেম্বর আজাদ ময়দানে হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের নয়া সরকারের শপথগ্রহণ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কে? এই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব এখনও মেলেনি। যদিও এক সংবাদমাধ্যমের দাবি, অজিত পওয়ার নাকি শনিবার পরিষ্কার করে দিয়েছেন বিজেপিই পাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর পদ। বাকি দুই শরিক শিব সেনার শিণ্ডে শিবির ও এনসিপির অজিত পওয়ার শিবির পাবে উপমুখ্যমন্ত্রীর আসন। কিন্তু এই বিষয়ে যেহেতু এখনও কোনও ঘোষণা হয়নি, তাই সাসপেন্স অব্যাহতই রয়েছে।
যদিও কোনও রকম বিতর্ক ধামাচাপা দিতে শিণ্ডে এটাও জানান, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেখানে আমার পূর্ণ সমর্থন থাকবে। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী পদে ফড়ণবিসের নাম প্রকাশ্যে আসতেই শিণ্ডের এই মন্তব্য বিজেপির শীর্ষ নেতাদের উপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিল। এই অবস্থায় রাজনৈতিক মহলের দাবি, মহা-কুরসির সংঘাত এত সহজে সমাধানের আলো দেখবে না।