নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বোলপুরের পর মুরারই। বুথের জন্য টাকা ভাগ নিয়ে লড়াই কর্মীদের মধ্যে! একপক্ষের অভিযোগ দল কর্মীদের জন্য টাকা বরাদ্দ করলেও মাঝখান থেকে কাটমানি মেরে দিচ্ছে জেলা নেতারা। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বরাদ্দ টাকা থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল বীরভূম লোকসভা ইনচার্জের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবারএই ঘটনাকে ঘিরে মুরারই বিজেপি পার্টি অফিসে মণ্ডল সহ সভাপতির সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়াল দুপক্ষ। পার্টি অফিসে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ভাঙা হয় স্ট্যান্ড ফ্যান থেকে চেয়ার। দুপক্ষই মুরারই থানার দ্বারস্থ হয়েছেন। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
মুরারই পার্টি অফিসে বীরভূম লোকসভার ইনচার্জ সুজিত দাস ও বিধানসভার ইনচার্জ আনন্দ হালদার টাকা তছরুপ করছিল বলে মণ্ডল সহ সভাপতি গোরাচাঁদ কোনাই লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনা প্রসঙ্গে মুরারই বিজেপির মণ্ডল সভাপতি নগেন মাল জানান, "আমার সামনেই দুজনে উত্তেজিত হয়ে পরে। দলের বিষয়। জেলা নেতারা বসে তা মিটিয়ে দেবেন।"
[আরও পড়ুন: নিউটাউন আবাসনের সেপটিক ট্যাঙ্কে মাংসের টুকরো-চুল! বাংলাদেশের সাংসদের দেহাংশ?]
লোকসভা নির্বাচনে ভোটের দিনে মুরারই বিধানসভায় সর্বত্র এজেন্ট দিতে পারেনি দেশের সবচেয়ে সংগঠিত দলটি। দলীয় হিসাবে বিধানসভার ২৮৭টি বুথের মধ্যে ১৮৯টি বুথে এজেন্ট ছিল তাদের। মঙ্গলবার মুরারই দলীয় দপ্তরে এজেন্টদের বকেয়া টাকা দেওয়ার কথা ছিল। বিজেপি প্রতিটি বুথে ১০ হাজার টাকা করে ভোট খরচ ধরেছিল। তার মধ্যে ৭ হাজার দিয়েছে। বকেয়া তিন হাজারের দাবিতে এজেন্ট থেকে কর্মীরা মুরারই আসে। হাতে হাতে ১৭ সি ফরম জমা দিয়ে বাকি তিন হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা। পাশাপাশি এদিন আগামী ৪ জুন গণনার জন্য কর্মীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিল বিজেপি। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের ইনচার্জ সুজিত দাস ও বিধানসভার ইনচার্জ আনন্দ হালদার সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
বৈঠক শেষে মুরারই ৫ নম্বর মন্ডলের সহ সভাপতি গোরাচাঁদ কোনাই তাঁদের বকেয়া তিন হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁর অভিযোগ, সে টাকা না দিয়ে নানা টালবাহানা করছিলেন সুজিত দাস ও আনন্দ হালদার। তাকে কেন্দ্র করেই দু পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। সুজিত দাস বীরভূম লাগোয়া মুর্শিদাবাদের হিলোরা এলাকার বাসিন্দা। তিনিই বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের বিষয়টি দেখছেন। কর্মীদের অভিযোগ, "সুজিত ও আনন্দদা হাতটানের লোক। তারা কর্মীদের টাকা আত্মসাত করে নিজেদের পকেটে ঢোকানোর মতলব করছিল।" তাই মুরারই থানায় গোরাচাঁদ কোনাই লিখিত অভিযোগে জানান। তিনি দাবি করেন, "তহবিলের টাকা তছরূপ করায় আমি তার প্রতিবাদ করি। তারা সকলে মিলে আমাকে মারধর করে।" থানায় পালটা অভিযোগ করেছেন সুজিত দাসরা।
[আরও পড়ুন: রাখি সাওয়ান্তের HIV! খবর পেয়ে হাসপাতালেই ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী]
মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাল জানান, "তাদের মণ্ডলের ৫১টি বুথের সবগুলিতে এজেন্ট ছিল। তবে তাকে ঘিরে যা হয়েছে দলীয় শৃঙ্খলার দৃষ্টিতে তা ঠিক হয়নি। এটা বসেই মিটিয়ে নেওয়া যেত।" তবে মণ্ডল সভাপতি নগেন মাল বলেন,"আমার ছজন সহ সভাপতির মধ্যে গোরাচাঁদের মাথা একটু গরম। সে তাঁর নিজের টাকা বুঝে পেয়েছে। এদিন সেই প্রথম উত্তেজিত হয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তাঁকে থামাতে গিয়ে পালটা শুনতে হয়েছে। এর আগেও একবার গোরাচাঁদ এভাবেই গোলমাল পাকিয়েছিল। জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই আমরা মানব। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় আমরা বসে মিটিয়ে নেব।"