সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৮০০০০০০০০০। এই মুহূর্তে এটাই বিশ্বের জনসংখ্যা। এবছর ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেক্টস ২০২২’ (World Population Prospects 2022) শীর্ষক যে রিপোর্ট রাষ্ট্রসংঘের তরফে প্রকাশ করা হয়েছিল, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী মঙ্গলবারই বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটি ছাড়িয়েছে। ১৯৭৪ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ৪০০ কোটি টপকেছিল। অর্থাৎ মাত্র ৪৮ বছরে সেটা দ্বিগুণ হয়ে গেল। ২০১১ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছাড়ায় ৭০০ কোটি। অর্থাৎ ১১ বছরে বিশ্বের জনসংখ্যা পেরল ১০০ কোটি। ওই রিপোর্টেই বলা হয়েছে, ২০৩০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা সাড়ে ৮০০ কোটি হবে। ২০৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি।
রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মধ্যেই ভারত জনসংখ্যার নিরিখে চিনকে টপকে যাবে। অর্থাৎ আর মাত্র এক বছর। তারপরই ভারতের জনসংখ্যা গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে যাবে। রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে ভারত এবং চিন দুই দেশের জনসংখ্যাই ১৪০ কোটির বেশি। ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন চিনের থেকে অনেক বেশি। সেকারণেই আগামী বছর চিনকে টপকে যাবে ভারত। শুধু ভারত নয়, গোটা পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি। রাষ্ট্রসংঘের (UN) হিসাব বলছে, শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই গোটা বিশ্বের ২৯ শতাংশ মানুষ বাস করেন। আর পূর্ব এশিয়ায় বাস করেন বিশ্বের ২৬ শতাংশ মানুষ।
[আরও পড়ুন: প্রার্থী-ক্ষোভের আগুন গুজরাট কংগ্রেসে, প্রদেশ দপ্তরে ভাঙচুর চালাল একদল কর্মী]
রাষ্ট্রসংঘের এই রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্যে উদ্বেগ বাড়বে ভারতে। খাদ্য, বাসস্থান ও কর্মসংস্থান নিয়ে এমনিতেই রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে দেশকে। দিনকে দিন কমে আসছে চাষযোগ্য জমি। ফলে জনবিস্ফোরণ যে ভয়াবহ খাদ্য সংকট ডেকে আনবে তা বলাই বাহুল্য। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, দ্রুত আর্থিক উন্নতি করলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি ভারতের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ‘একটি মাত্র সন্তান’ নীতির মাধ্যমে জনসংখ্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে চিন। তবে গণতান্ত্রিক ভারতে এহেন নীতি কার্যকরী করা সহজ নয়। সঞ্জয় গান্ধীর (Sanjay Gandhi) আমলেও ‘নির্বীজকরণ’ করা নিয়ে ভারতে কম জল ঘোলা হয়নি। ফলে শিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
[আরও পড়ুন: বিমানের ভিতরেই ‘সমুদ্র গর্জন’! HIV পজিটিভ শিশুদের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নপূরণ জগন্নাথধামে]
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবথেকে দ্রুত হারে বেড়ে চলা জনসংখ্যার দেশগুলির অধিকাংশই দরিদ্র। যেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি দারিদ্র্য দূরীকরণ, সাম্য, খাদ্য সমস্যা সমাধান, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা প্রসারের উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিয়েছে। ওই দেশগুলিতে গড় আয়ু এখন উন্নত দেশগুলির চেয়ে অনেক কম।