সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঁধভাঙা জলের মতো এগিয়ে আসছে তালিবান (Taliban)। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে পাহাড়ি দেশটির নয়টি প্রাদেশিক রাজধানী দখল করে ফেলেছে জঙ্গি সংগঠনটি। এই গতিতে আগামী তিন মাসের মধ্যেই কাবুলের দখল নিতে পারে তারা। এমনটাই আশঙ্কা করা হয়েছে পেন্টাগনের এক রিপোর্টে।
[আরও পড়ুন: Work from home: বাড়ি বসে কাজ করা কর্মীদের মাইনে কমাচ্ছে এই নামী সংস্থা]
বিগত দিন সাতেকে আফগানিস্তানের ৩৪টির প্রদেশের মধ্যে নয়টি প্রদেশের রাজধানী দখল করেছে তালিবান। সেগুলি হচ্ছে- শেবেরঘান (জাজওয়ান প্রদেশ), জারাঞ্জ (নিমরুজ প্রদেশ), তালেকান (জাজওয়ান প্রদেশ), আইবক সিটি (সামাঙ্গান প্রদেশ), কুন্দুজ শহর (কুন্দুজ প্রদেশ), সর-এ-পুল শহর (সর-এ-পুল প্রদেশ), ফৈজাবাদ (বাদাখশান প্রদেশ), তালুকান (তাখার প্রদেশ), ফারাহ সিটি (ফারাহ প্রদেশ)। এহেন সংকট কালে কাবুলের পতন সময়ের অপেক্ষা মাত্র বলেই দাবি করা হয়েছে মার্কিন রিপোর্টে। পরিচয় গোপন রাখা হবে, এই শর্তে পেন্টাগনের এক আধিকারিক রয়টার্সকে এই রিপোর্টের কথা জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের আশঙ্কা, তালিবান যে গতিতে এগোচ্ছে এবং ক্রমে যে পরিমাণ শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তাতে এক মাসের মধ্যে কাবুলকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারবে তারা। এবং তারপরে আর দু’মাসের মধ্যেই দেশের রাজধানীকে সম্পূর্ণ ভাবে নিজেদের দখলে নিয়ে আসতে পারবে তালিবান বাহিনী। অর্থাৎ, তিন মাসের মধ্যে কাবুলের পতন অনিবার্য। এদিকে, আফগান সেনার জন্য পরিস্থিতি জটিল করে কুন্দুজের সেনা ঘাঁটি ও বিমানবন্দর দখল করে নিয়েছে তালিবান। এরই মধ্যে আজ মাজার-ই-শরিফে গিয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি। বুধবার তালিবান হুমকি দিয়েছিল যে, এ বার মাজার দখল করবে তারা। আগামী কয়েক দিনের জোরদার লড়াইয়ে সেনাদের মনোবল বাড়াতেই প্রেসিডেন্ট গনি মাজারে গিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে হিংসা থামাতে দোহায় তালিবানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে আমেরিকা, চিন, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, উজবেকিস্তান, পাকিস্তান ও রাষ্ট্রসংঘের প্রতিনিধিরা। আফগান সরকারের পক্ষে ওই আলোচনায় শামিল হয়েছেন কাবুলের মধ্যস্থতাকারী আবদুল্লা আবদুল্লা। রয়েছেন আফগানিস্তানে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত জালমে খলিলজাদ। বলে রাখা ভাল, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকেই দোহায় তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চলছে। যদিও তাতে কোনও ফল মেলেনি। জানা গিয়েছে, দেশে হিংসা থামানোর জন্য তালিবানের কাছে আবেদন জানাবেন কাবুলের প্রতিনিধিরা। আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান থামানোর জন্য তালিবানের কাছে আরজি জানাবেন জালমে খোলইল্যাদ বলেও জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, বিগত কয়েকদিনে এই শান্তি আলোচনায় তৃতীয়পক্ষ বা মধ্যস্থতাকারী ‘কনট্যাক্ট গ্রুপ’গুলির সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছে আফগান সরকার ও তালিবানের প্রতিনিধি দল। তবে দু’টি বিষয়ে কিছুতেই তাদের মতের মিল না হওয়ায় থমকে গিয়েছে গোটা শান্তি আলোচনা।