সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কর্মরত অবস্থায় ঠিকমতো প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়াই নাকি অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্যত বোতলের মধ্যে প্রস্রাব করতে হয় আমাজনের (Amazon) কর্মীদের! এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে ই-কমার্স জায়েন্টের বিরুদ্ধে। মার্কিন কংগ্রেসের এক সদস্য টুইট করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। তারপর থেকে বিতর্ক রীতিমতো দানা বেঁধেছিল। প্রাথমিক ভাবে এই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছিল আমাজন। কিন্তু তারপরও বিতর্কের আগুন নেভেনি। অবশেষে পিছু হটে আমাজন স্বীকার করে নিল, আমেরিকায় তাদের কোনও কোনও ড্রাইভারকে অবস্থা বিশেষে বোতলে প্রস্রাব করতে হয়।
ঠিক কী অভিযোগ উঠেছিল? ব্রিটিশ সাংবাদিক জেমস ব্লাডওয়ার্থ একটি বই লিখেছেন আমাজনের উপর। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাঁকেও আমাজনে থাকার সময় একাজ করতে হয়েছে। পরে টুইটারেও সেই দাবি করেন তিনি। তাঁর সেই টুইট ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
[আরও পড়ুন: সুড়ঙ্গে নির্মাণকাজ চলাকালীন ঢুকে পড়ল ট্রেন, তাইওয়ানে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত ৩৬]
এরপরই সেই অভিযোগের জবাব দেন আমাজনের হেড এগজিকিউটিভ ডেভ ক্লার্ক। এমন অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন ই-কমার্স এই সংস্থায় কাজের পরিবেশ অত্যন্ত প্রগতিশীল। পাশাপাশি আমাজন যে তার কর্মীদের প্রতি ঘণ্টার জন্য ১৫ ডলার পারিশ্রমিক দেয়, তাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
এরপরই মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য মার্ক পোক্যান টুইট করে ক্লার্ককে কটাক্ষ করে লেখেন, ”ঘণ্টায় ১৫ ডলার দেওয়ার মানেই এই নয় যে আপনাদের কাজের পরিবেশ প্রগতিশীল।” তাঁর দাবি, যে সংস্থায় কর্মীদের বোতলে প্রস্রাব করতে হয়, সেখানকার কাজের পরিবেশকে ভালো বলাই যায় না।
[আরও পড়ুন: ফের মৃত্যুমিছিল মায়ানমারে! জুন্টার গুলিতে প্রাণ হারালেন ৫ গণতন্ত্রকামী]
উত্তরে আমাজনের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পোক্যানকে খোঁচা মেরে লেখা হয়, ”আপনি সত্যিই বিশ্বাস করেন বোতলে প্রস্রাব করার ব্যাপারটা? যদি এটা সত্যি হত, কেউ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে না।”
তবে আমাজনের এই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। সংবাদ মাধ্যমে মুখ খোলেন সংস্থার বহু কর্মী। তাঁরা জানান, উপায়ান্তর না দেখে বহু ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বোতলকেই হালকা হওয়ার একমাত্র ‘অপশন’ হিসেবে বেছে নিতে হয়।
অবশেষে সুর বদল আমাজনের। একটি বিবৃতি পেশ করে তারা ক্ষমা চেয়েছে মার্ক পোক্যানের কাছে। সরাসরি অভিযোগকে মেনে নিয়ে ই-কমার্স জায়ান্টের জবাব, ”আমরা জানি আমাদের ড্রাইভারদের অনেক সময়ই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, যখন শৌচাগারই পাওয়া যায় না। বিশেষ করে ট্র্যাফিকে ফেঁসে গেলে কিংবা কখনও গ্রামীণ এলাকায় গেলে। বিশেষ করে কোভিডের সময় যখন বহু শৌচাগার বন্ধ রাখা হয়েছিল, তখন এটার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল।” তবে এটা কেবল আমাজনের নয়, বরং এই ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা বলেও দাবি তাদের। সেই সঙ্গে তাদের আশ্বাস, ”আমরা এটার সমাধান করতে চাই।” যদিও তাদের বক্তব্যে খুশি হতে পারেননি পোক্যান। তাঁর সটান জবাব, ”বিষয়টা আমাকে নিয়ে নয়, আপনাদের কর্মীদের নিয়ে। তাঁদের সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপার।”