সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিদ্বন্দ্বীদের পিছনে ফেলে সবচেয়ে বেশি দূরে জ্যাভলিন ছুড়ে অলিম্পিকে সোনা জিতেছিলেন নীরজ চোপড়া। এবার ভারতের সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বীরাও 'জ্যাভলিনের' ভয়ে কাঁপছে! এই জ্যাভলিন ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। শুল্ক-সংঘাতের আবহেই আমেরিকা থেকে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র জ্যাভলিন কিনতে চলেছে ভারত, আগেই জানা গিয়েছিল। এই বিষয়ে বুধবার সিলমোহর দিল মার্কিন প্রশাসন। দু'টি আলাদা বিবৃতিতে ট্রাম্পের দেশের ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পোরেশন এজেন্সি (ডিএসসিএ) জানিয়েছে, ৯২.৮ মিলিয়ান ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২৫ কোটি টাকা) ভারত-মার্কিন অস্ত্র-চুক্তি বাস্তবায়ন হতে চলেছে।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, সেনাবাহিনী ১২টি লঞ্চার এবং ১০৪টি ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে চলেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রেরই পোশাকি নাম ‘এফজিএম-১৪৮ অ্যান্টি ট্যাঙ্ক জ্যাভলিন মিসাইল’। গত সাড়ে তিন বছরে ইউক্রেন যুদ্ধে বার বার নিজের জাত চিনিয়েছে আমেরিকার এই জ্যাভলিন। এর শক্তিতেই পুতিনসেনার একের পর এক টি-৭২, টি-৯০ ট্যাঙ্ক উড়িয়েছে জেলেনস্কির ফৌজ। ডিএসসিএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রথামিকভাবে ভারতের সঙ্গে ৪৫.৭ মিলিয়ান ডলারের চুক্তি হচ্ছে। এই প্যাকেজে থাকছে জ্যাভলিন এফজিএম-১৪৮ ক্ষেপণাস্ত্র, ২৫টি জ্যাভলিন লাইটওয়েট কমান্ড লঞ্চ ইউনিট (এলডাব্লুসিএলইউ) অথবা জ্যাভলিন ব্লক ১ কমান্ড লঞ্চ ইউনিট (সিএলইউ)। এরপর ধাপে ধাপে ভারতীয় সেনার হাতে আসবে মোট ১২টি লঞ্চার এবং ১০৪টি ক্ষেপণাস্ত্র।
যুদ্ধের ময়দানে জ্যাভিলিনের কার্যকারিতা অপরিসীম। একজন মাত্র সৈনিক এটিকে ব্যবহার করতে পারেন। ক্ষেপণাস্ত্রটির একটি লঞ্চার রয়েছে, যেটি কাঁধে রেখে নিখুঁত লক্ষ্যে ‘জ্যাভলিন’ ছোড়া যায়। ঠিক যেমন ছোড়া যায় আমেরিকারই তৈরি ‘শোল্ডার ফায়ারড’ বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র স্ট্রিংগার। একটি ‘জ্যাভলিন’-এর ওজন আনুমানিক ২৩ কেজি। বহন করতে পারে সাড়ে আট কেজি বিস্ফোরক। এর লঞ্চার সাধারণত ৬.৪ কেজির হয়ে থাকে। ২,৫০০ মিটার পাল্লার এই মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধীর গতিতে ওড়া হেলিকপ্টার ধ্বংস করতেও পটু।
বুধবারের বিবৃতিতে মার্কিন ডিফেন্স সিকিউরিটি কর্পোরেশন এজেন্সি জানিয়েছে, প্রস্তাবিত অস্ত্র-চুক্তি আমেরিকার বিদেশ নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার অনুসারী। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে এই চুক্তি উভয় দেশের সম্পর্ককে মজবুত করবে। ভারতের তরফে অবশ্য এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এদিকে বিরোধীদের কটাক্ষ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আত্মনির্ভরতা’র আহ্বানের পরিপন্থী।
