সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাস্টিন ট্রুডোর ইস্তফার পর গত ১৪ মার্চ কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন মার্ক কারনি। তবে শপথগ্রহণের মাত্র ৯ দিনের মাথায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের ডাক দিলেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ২৮ এপ্রিল দেশে নতুন করে সাধারণ নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনেই সরকার বেছে নেবেন কানাডার মানুষ। আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার বিরুদ্ধে কানাডার চলমান শুল্কযুদ্ধে জনগণের সমর্থন আদায় করে নিতে চান কারনি যার জেরেই এই পদক্ষেপ।

আসলে প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। এরপর সেই পদে বসেন লিবারাল পার্টির মার্ক কারনি। এর জন্য ভোট হয়েছিল ঠিক তবে তা দলীয় ভোট। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর কানাডার জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়েছে। কানাডার একের পর এক পণ্যে বিপুল পরিমাণ শুল্ক আরোপ করেছে হোয়াইট হাউস। জটিল এই পরিস্থিতি শক্তহাতে মোকাবিলা করতে শুধু দলীয় সমর্থন নয় দেশবাসীর সমর্থন চান কারনি। সেই লক্ষ্যেই সময়ের আগে সরকার ভেঙে দিয়ে দেশে সাধারণ নির্বাচনের ডাক দিলেন তিনি।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার রাতে সোশাল মিডিয়ায় এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন কারনি। তিনি লেখেন, 'আমি এই মাত্র গভর্নর জেনারেলকে জানিয়েছি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে এবং ২৮ এপ্রিল দেশে নির্বাচন ঘোষণা করতে। ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে আমাদের। আমরা চাই কানাডাকে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। দেশের জন্য এই কঠিন কাজের দায়িত্বভার কার হাতে যাওয়া উচিত তা ঠিক করার অধিকার কানাডার মানুষের। তাই এই সিদ্ধান্ত।' পাশাপাশি তিনি আরও জানান, 'কানাডাকে সুরক্ষিত করতে অনেক কাজ বাকি রয়েছে। প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন। ট্রাম্পের অনৈতিক শুল্কের জেরে দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে তার মোকাবিলা করতে হবে। আর এই কাজে আমাদের জনগণের রায় দরকার।'
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর কানাডা সরকারের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। যার পালটা, কানাডার উপর একের পর এক শুল্কের বোঝা চাপিয়েছে ওয়াশিংটন। যদিও পালটা দিতেও কসুর করেনি কারনি সরকার। আমেরিকার উপর পালটা শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা। এই পরিস্থিতির মাঝেই জনসমর্থন আদায়ে নতুন করে নির্বাচনের ঘোষণা করলেন কারনি। যদিও এর পিছনে রাজনৈতিক অঙ্কও দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। কানাডায় ২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে লিবারেল পার্টি। আগামী অক্টোবর মাসে এখানে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এদিকে দেশের অন্দরে জনরোষের কারণে কনজারভেটিভদের পাল্লা ভারী হচ্ছিল। তা আঁচ করেই সরানো হয় ট্রুডোকে। তাতে লিবারাল পার্টির সমর্থন বাড়ে। এবার সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাতীয়তাবাদের পালে হাওয়া তুলে দেশে নির্বাচনের ডাক দিলেন কারনি।