সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইটের জবাব পাথর! মঙ্গলবার চিনা পণ্যের উপর নতুন করে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। এর ফলে সবমিলিয়ে চিনা পণ্যে মার্কিন শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশ। বুধবার পালটা আমেরিকান পণ্যের উপর ৮৪ শতাংশ শুল্ক চাপাল বেজিং। ধুন্ধুমার এই শুল্ক 'বিশ্বযুদ্ধে' আগেই ভারতকে পাশে চাইছে বেজিং। দুই শক্তিশালী দেশের বাণিজ্য যুদ্ধে শঙ্কিত গোটা পৃথিবীর অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

গত বুধবার চিনের উপর ৩৪ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। এর পালটা পদক্ষেপ নেয় চিন। শুক্রবার একই হারে শুল্ক চাপানো হয় মার্কিন পণ্যে। চিনের এই পদক্ষেপের পরই ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন চিন যদি এই শুল্ক প্রত্যাহার না করে তাহলে মঙ্গলবারের মধ্যে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে চিনা পণ্যের উপরে। সেই মতো মঙ্গলবার বেজিংয়ের উপর চাপে আরও ৫০ শতাংশ কর। শুরুতে ২০ শতাংশ শুল্ক তো ছিলই তার সঙ্গে বাড়তি ৩৪ ও ৫০ শতাংশ মিলে চিনের উপর মোট শুল্কের বোঝা চাপে ১০৪ শতাংশ।
এরপর চিনের তরফে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, "আমেরিকা যদি আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ করতে চায় তবে আমরাও শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে প্রস্তুত। আরও শুল্ক বসালে নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় পালটা জবাব দেবে চিন।" বাস্তবে তাই ঘটল। আমেরিকা নতুন করে ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর পর পালটা মার্কিন পণ্যে ৮৪ শতাংশ শুল্ক বসাল বেজিং। এছাড়াও ১৮টি মার্কিন সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। শি জিনপিং সরকারের অর্থমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, "চিনের উপর শুল্ক চাপানো আমেরিকার ভুলের পর ভুল। চিনের অধিকার এবং স্বার্থকে গুরুতর আঘাত করা হয়েছে। যা বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে গুরুতরভাবে দুর্বল করেছে।"
এদিকে আমেরিকার বিরুদ্ধে লাগামছাড়া শুল্কযুদ্ধে ভারতকে পাশে চেয়ে বার্তা দিয়েছেন ভারতের চিনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং। এক্স হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে বার্তা দিয়ে ইউ জিং জানান, ‘দুই বৃহত্তর উন্নয়নশীল দেশের উচিত সমস্যা কাটিয়ে ওঠার জন্য একে অপরের পাশে দাঁড়ানো।’ চিনের এই আর্জি অবশ্য নতুন কিছু নয়, মার্কিন চাপের বারবার ভারতকে পাশে চেয়ে বার্তা দিয়েছে চিন। প্রকাশ্যে জানিয়েছে, এবার সময় এসেছে এশিয়ার দুই মহাশক্তিধর হাতি ও ড্রাগনের নাচ দেখানোর। বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনটা হওয়া ভীষণ প্রয়োজন। যদিও ভারতের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি কখনই। কারণ ভারতের চিনের বিশ্বাসযোগ্যতা বরাবরই প্রশ্নের মুখে। চিন মুখে বলে এক, আর করে আর এক। অতীতেও সে নজির বহুবার দেখা গিয়েছে। ফলে এমন পরিস্থিতিতে চিনকে খুব বেশি গুরুত্ব না দিয়ে মেপে পা ফেলাই শ্রেয় বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।