সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভরা সভায় আততায়ীর গুলিতে মৃত্যু হয়েছে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের (Shinzo Abe)। তাঁর মৃত্যুতে জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। কিন্তু আবের উপর গুলি চালানোকে কার্যত সমর্থন করেছে চিন (China)। জাপানের বহু মানুষই আবের মতাদর্শের বিরোধী, এমনই দাবি করা হয়েছে। চিনের আগ্রাসী মনোভাবকে রুখে দিতে সক্রিয় ছিলেন আবে। তাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি করছে বেজিং।
একটি চিনা সংবাদ মাধ্যমে মুখ খুলেছেন শিয়াং হাওইউ নামে এক গবেষক। তিনি বলেছেন, শিনজো আবে সবচেয়ে বেশি দিন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘অ্যাবেনমিক্স’-এর কারণে দেশে ধনী-দরিদ্রের আর্থিক অবস্থার মধ্যে তফাত বেড়ে যায়। সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিভাগেও আমূল পরিবর্তন এনেছিলেন আবে। সব মিলিয়ে দেশবাসী ক্ষুব্ধ ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর উপরে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই জাপানে সংসদীয় নির্বাচন। এমতাবস্থায় রাজনৈতিক কারণেও শিনজোকে (Shinzo Abe Death) হত্যা করা হতে পারে বলেও দাবি করেছেন ওই গবেষক।
[আরও পড়ুন:বরিসের পরে কে? ব্রিটেনের মসনদে বসা নিয়ে ভারত ও পাক বংশোদ্ভূতর মধ্যে লড়াই]
চিনা সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস আবের গুলিবিদ্ধ হওয়ার একটি খবর শেয়ার করে সংস্থাটির টুইটারে লেখা হয়েছে, “দীর্ঘতম সময় ধরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শিনজো আবে। তা সত্ত্বেও জাপানে সবসময়ই তাঁর মতাদর্শের বিরোধিতা করা হয়েছে। তাঁর অ্যাবেনমিক্স নীতির ফলে হতাশ ছিল দেশের জনতা।” তবে সরকারিভাবে চিনের তরফে আবের মৃত্যু নিয়ে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। আবের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।” তখনও আবের মৃত্যু হয়নি। জানা গিয়েছে, আবের মৃত্যুর পরে চিনের বেশ কিছু জায়গায় সেলিব্রেশন করা হয়েছে। ওই আততায়ীকে নায়কের মর্যাদা দিয়েছে চিনের সাধারণ মানুষ।
প্রসঙ্গত, ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকায় চিনের আগ্রাসন রুখতে অন্য দেশগুলিকে একত্রিত হতে হবে, সেই কথা শিনজো আবেই জানিয়েছিলেন। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার অক্ষ কোয়াডের (QUAD) গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন তিনি। ফলে আবের প্রতি বরাবরই চিনের বিরূপ ধারণা রয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই আবের মৃত্যুতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে চিন।