সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরকারি নির্দেশিকা না মানায় অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ২২০ কোটি ডলার অর্থ সাহায্য বন্ধ করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্বজুড়ে এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই আরও একধাপ এগিয়ে হার্ভার্ডকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন ট্রাম্প। বললেন, "বামপন্থীদের আখড়া, জায়গাটা হাস্যকর। পঠনপাঠনের জন্য ভালো জায়গা বলা যায় না।" মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যে কার্যত হতবাক আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের শিক্ষা মহল।
এদিন ট্রাম্প বলেন, "সবাই জানে হার্ভার্ড পথ হারিয়েছে।" এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর বামপন্থীদের প্রভাব নিয়ে সোচ্চার হন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, "হার্ভার্ড সব সময় উগ্র বামপন্থী, বোকা এবং 'পাখির মস্তিষ্ক' লোকেদের নিয়োগ করেছে। যাঁরা ছাত্রদের এবং তথাকথিত 'ভবিষ্যতের নেতাদের' ব্যর্থতার পাঠ দিয়েছে কেবল। সেই বামপন্থী মাদকাসক্তরা আবার হার্ভার্ডে শিক্ষকতা করছেন। সেই কারণেই হার্ভার্ডকে আর শিক্ষার জন্য ভালো জায়গা বলা যায় না। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলির মধ্যেও পড়ে না।" এখানেই না থেমে ট্রাম্প বলেন, "হার্ভার্ড বামপন্থীদের আখড়া। একটা হাস্যকর জায়গা। এখানে ঘৃণা এবং বোকামি শেখানো হয়। কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য়ের যোগ্য নয়।"
উল্লেখ্য, ইজরায়েল-প্যালেস্টাইনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে গোটা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ। পশ্চিম বিশ্বের শিক্ষিত সমাজও ব্যতিক্রম নয়। আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও প্যালেস্টাইনের সমর্থনে বিক্ষোভ হচ্ছে। যা একেবারেই না পসন্দ ট্রাম্প প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ইহুদি-বিদ্বেষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ইহুদি-বিদ্বেষ বন্ধ করার জন্য কী কী করণীয়, সে বিষয়ে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল সরকারের তরফে। যা মানতে রাজি হয়নি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উলটে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিশ্বখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।
এরপরেই হার্ভার্ডকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ট্রাম্প প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ২২০ কোটি ডলারের সাহায্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘নিউ ইয়র্ক টাইম্স’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৬ কোটি ডলারের একটি চুক্তিও স্থগিত রাখা হচ্ছে। এরপরেও অবশ্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন এম গার্বার মাথা নত করতে রাজি নন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “বিশ্ববিদ্যালয় নিজের স্বাধীনতাকে সঁপে দেবে না বা নিজের সাংবিধানিক অধিকারকেও ত্যাগ করবে না।”
