সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুদানে রাষ্ট্রসংঘের ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের ৬ জন শান্তিরক্ষীর, পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। শনিবারের এই হামলায় মৃতদের নাম, পরিচয়-সহ এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। জানা যাচ্ছে, এই হামলার নেপথ্যে সুদানের আরএসএফ বাহিনী। ন্যক্কারজনক এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসও।
জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ৩টে ৪০ নাগাদ রাষ্ট্রসংঘের ঘাঁটিতে অতর্কিতে এই ড্রোন হামলা চালান হয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৬ জনের। মৃতরা হলেন কর্পোরাল মহম্মদ মাসুদ রানা, সৈনিক মহম্মদ মমিনুল ইসলাম, শামীম রেজা, শান্ত মণ্ডল, মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং কর্মচারী মহম্মদ সবুজ মিয়া। পাশাপাশি আরও ৮ জন জখম হন। এই ঘটনার পর রবিবার এই সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সেনা। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে এই হামলার নেপথ্যে রয়েছে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সুদানের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)।
এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস বলেন, 'সুদানের কাদুগলিতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার কড়া নিন্দা জানাই। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এটি যুদ্ধাপরাধ হিসাবে গণ্য হতে পারে। দোষীদের শাস্তি হবেই।'
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকে গৃহযুদ্ধে উত্তপ্ত সুদান। ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল- আবদেল আল ফতা আল বুরহান ও জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালো। প্রথম জন সুদানের সেনাপ্রধান এবং ২০১৯ থেকে দেশের সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থার জন্য ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলের প্রধান। দ্বিতীয় জন দেশের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর প্রধান তথা কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। দুজন জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে। গত বছর এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকে চলা লড়াইয়ে যুযুধান দুই পক্ষের কেউই সংঘর্ষবিরতি মানছে না। রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে পশ্চিমের দারফুর প্রদেশে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন। রাজধানী খারতুমেও প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। যুদ্ধের জেরে ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত।
