সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক জামাল খাশোগ্গি হত্যার পর এই প্রথম আমেরিকায় সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন। ওভালের অফিসে তাঁর পাশে বসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করলেন, যুবরাজ ওই খুন সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। 'অতিথিকে বিব্রত' করার প্রয়োজন নেই বলেও উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়ে দিলেন তিনি। এর পিছনে রাজনৈতিক অঙ্কই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
এদিন সাংবাদিকদের সামনে দ্রুত যুবরাজের 'রক্ষাকবচ' হয়ে দাঁড়ান ট্রাম্প। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ''আপনারা এমন একজনের প্রসঙ্গ তুলছেন যিনি অত্যন্ত বিতর্কিত চরিত্র ছিলেন। বহু মানুষই কিন্তু ওই ভদ্রলোককে (খাশোগ্গি) পছন্দ করতেন না। তবে আপনি পছন্দ করুন বা না করুন, ঘটনা তো ঘটতেই থাকে। কিন্তু উনি (যুবরাজ) এসব কিছুই জানতেন না। আমরা বিষয়টাকে এখানে শেষ করে দিতে চাই। আমাদের অতিথিকে এমন বিষয়ে প্রশ্ন করে আপনারা তাঁকে বিব্রত করতে পারেন না।''
পাশাপাশি যুবরাজও মুখ খোলেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক। কোনও ব্যক্তির এভাবে প্রাণহানির নিন্দা করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ''আমরা আমাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত করেছি, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে। এটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। এবং একটা বড়সড় ভুল।''
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি দূতাবাসে খুন হন ‘ওয়াশিংটন পোস্টের’ কলামিস্ট জামাল খাশোগ্গি। দ্বিতীয়বার বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। সৌদি রাজ পরিবারের পাশাপাশি সে দেশের যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত খাশোগ্গির খুনের পরেই সরব হয় তুরস্ক-সহ একাধিক দেশ। এই হত্যাকান্ডে সলমনকে দায়ী করেছিল আমেরিকাও। ওয়াশিংটনের একটি আদালতে খাশোগ্গির স্ত্রী হ্যাটিস সেঙ্গিজ ও মানবাধিকার সংস্থা ‘DAWN’ এক মামলাও করেন সৌদি যুবরাজকে কাঠগড়ায় তুলে। যদিও আদালত সলমনকে ‘ক্লিন চিট’ই দিয়েছিল। তখনই ওয়াকিবহাল মহলে প্রশ্ন ওঠে, অস্ত্রের বেসাতি কি সাংবাদিকের মরণযন্ত্রণা ঢেকে দিল! এদিন ট্রাম্পের আচরণও বুঝিয়ে দিল ইরানের উপর চাপ বজায় রাখতে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি সমর্থন অত্যন্ত জরুরি। তাই তিনি এই বিতর্ক থেকে দূরেই সরিয়ে রাখতে চান তাঁকে। বিশ্লেষকরা তেমনই মনে করছেন।
