সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দুঁদে রাজনীতিক। কিন্তু তার পাশাপাশি শানিত ব্যবসায়ীও বটে। ২০২৪-এ প্রতিপক্ষকে দুরমুশ করে হোয়াইট হাউসের কুরসি দখলের বহু আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্কের পরিচয় রেখেছিলেন। কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করে সদ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদ দখল করেছেন। এক সময় এই হ্যারিসের প্রচারসভার জন্যই নাকি তহবিল গড়তে অনুদান দিয়েছিলেন স্বয়ং ট্রাম্প। এক বার নয়, দুবার। দুদফায় মোট ৬ হাজার মার্কিন ডলারের অনুদান। আশ্চর্যের বিষয়, শুধু ট্রাম্প নন। তাঁর কন্যা, ইভাঙ্কাও একসময় হ্যারিসের প্রচারসভার জন্য অনুদান দিয়েছিলেন।
বিস্ময়কর হলেও ঘটনাটা সত্যি। আসলে রাজনীতিতে আসার আগেই ট্রাম্প অতি-সফল ব্যবসায়ী। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী রাজনীতিক ট্রাম্প কিন্তু আগাগোড়া রিপাবলিকান ছিলেনও না। ১৯৮৭ সালে তিনি প্রথম রিপাবলিকান পার্টিতে নাম লিখিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু নথি বলছে, ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ট্রাম্প ছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ট্রাম্প কমলা হ্যারিসের প্রচারসভার জন্য প্রথম অনুদান দেন। ঠিক তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১০ সালে কমলা ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ট্রাম্প সেই সময় ছিলেন একজন সফল রিয়েল এস্টেট ডেভলপার। তিনি হ্যারিসের প্রচারসভার তহবিলের জন্য ৫ হাজার মার্কিন ডলারের অনুদান দেন।
এর পর ২০১৪ সালে যাতে হ্যারিস অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে পুনরায় নির্বাচিত হন, সেই সংক্রান্ত প্রচারসভার তহবিল গঠনে ট্রাম্প অনুদানটি করেছিলেন। যে চেকটিতে ট্রাম্প সই করেছিলেন, তাতে তারিখ লেখা ‘২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১’, নিচে রয়েছে ট্রাম্পের সই। চেকে লেখা, ‘পেয়েবল টু রি-ইলেক্ট অ্যাটর্নি জেনারেল কমলা ডি হ্যারিস ২০১৪’। সোশাল মিডিয়ায় সেই চেকের ছবি এখন ভাইরাল। এর দুবছর পর ফের ট্রাম্প হ্যারিসের রি-ইলেকশন ক্যাম্পেনের জন্য অনুদান দেন। এবার ১ হাজার ডলার। আবার ২০১৪ সালে, ট্রাম্প-কন্যা ইভাঙ্কাও হ্যারিসের প্রচারসভার জন্য ২ হাজার ডলারের অনুদান করেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, হ্যারিস কিন্তু সেই সময় চেকগুলো কাজে লাগাননি। অনেক পরে তিনি ট্রাম্পের তরফে পাওয়া চেক একটি মানবাধিকার সংগঠনের (নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন) হাতে তুলে দেন। এখন প্রশ্ন, ট্রাম্প কেন এই অনুদান দিয়েছিলেন?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প একজন সফল এবং দূরদর্শী ব্যবসায়ী। তাঁর সেই তুখড় ব্যবসায়িক মস্তিষ্কই তাঁকে এই পদক্ষেপ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। মার্কিন রাজনৈতিক জগতের প্রখ্যাত ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং সুসম্পর্ক তৈরির দূরদর্শী ভাবনাচিন্তা থেকেই তিনি এই অনুদান দেন। পরবর্তীকালে ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রচার কর্মসূচির অন্যতম মুখপাত্র, স্টিভেন চেউংও একই মত প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একজন গ্লোবাল বিজনেসম্যান। তিনি জানেন, কমলা হ্যারিসের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকদের সঙ্গে ময়দানে নামলে, সেই খেলা কীভাবে খেলতে হয়।’’ তবে শুধু কমলা হ্যারিস নয়, ট্রাম্প একসময় হিলারি ক্লিন্টনের প্রচারসভার তহবিলের জন্যও অনুদান দিয়েছেন বলেই নথিপত্রে উল্লেখ রয়েছে।