সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে শনিবার জারি হয় চূড়ান্ত সতর্কতা। আমেরিকার দিকে নাকি ধেয়ে আসছে ব্যালিস্টিক মিসাইল, এই মর্মে বেজে ওঠে অ্যালার্ম। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন স্থানীয়রা। এমনতেই আমেরিকার বিরুদ্ধে হামলার রক্তচক্ষু রয়েছে উত্তর কোরিয়ার খ্যাপাটে যুদ্ধবাজ নেতা কিম জং উনের। তিনিই কি হুমকিকে সত্যি প্রমাণিত করতে কিম তাঁর মিসাইলের বোতাম টিপে দিলেন?
খানিক পরে হাওয়াইয়ের টিভি চ্যানেল খোলসা করল গোটা ব্যাপারটা। ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলার যে অ্যালার্ম বেজে উঠেছিল, সেটি ভুল করে বাজানো হয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে টিভি চ্যানেল জানিয়ে দিল, সকাল আটটা নাগাদ কর্মীদের শিফট পরিবর্তন হচ্ছিল। সেই সময়ই ভুলবশত কেউ হামলার চূড়ান্ত সতর্কতার অ্যালার্ম টিপে ফেলেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে কোনও মিসাইল শেল্টারে আশ্রয় নিতে ছুটেছেন। কেউ আবার ইশ্বরের কাছে শেষ প্রার্থনা সেরে নিতে শুরু করেছিলেন। প্রায় সকলেই অ্যালার্ম শুনে ভেবেছিলেন, আজই বোধহয় তাঁদের জীবনের শেষ দিন।
[রাওয়াতের খোঁচায় রক্তাক্ত, ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধের হুমকি পাকিস্তানের]
আর হবে না-ই বা কেন? গত কয়েক মাস ধরে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে সম্পর্ক গিয়ে তলানিতে ঠেকেছে। উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক রীতিমতো বিবৃতি জারি করে রেখেছেন, যে তাদের নয়া ব্যালিস্টিক মিসাইল মার্কিন ভূখণ্ডে হামলা করতে সক্ষম। তেমনটা হলে ছাইয়ের স্তূপে পরিণত হবে আমেরিকা। এ সবই সংবাদমাধ্যমের দৌলতে বিলক্ষণ জানেন হাওয়াইয়ের বাসিন্দারা। আর তাই যখন মিসাইল হামলার অ্যালার্ম বেজে উঠেছে, তাঁরা ভেবেই নিয়েছিলেন যে কিম ফাঁকা বুলে ঝাড়েননি। তাঁদের প্রয়ই দ্বীপপুঞ্জের দিকে বোধহয় ধেয়ে আসছে কিমের মিসাইল। মিসাইলের গায়ে হয়তো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম লেখা।
কিন্তু সত্যিটা প্রকাশ্যে আসতেই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন হাওয়াইয়ের বাসিন্দারা। এই ঘটনার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন হাওয়াইয়ের এমারজেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির প্রশাসক ভার্ন মিয়াগি। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে আমরা এই অ্যালার্ম সিস্টেমটি তৈরি করেছিলাম যাতে আচমকা হামলার একটু আগেই আপনাদের সতর্ক করে দিতে পারি। কিন্তু আজ আমরা একটা মস্ত ভুল করে ফেলেছি। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে এরকম ভুল আর যেন না হয়।’ ‘ফলস অ্যালার্ম’ বেজে উঠতেই সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন এমারজেন্সি সার্ভিসের ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। হাওয়াইয়ের গভর্নর নির্দেশ দিয়েছেন, অ্যালার্ম সিস্টেমটি নিখুঁত না হওয়া পর্যন্ত যেন আর কোনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা হয় সেটি নিয়ে।
[ভারতের দীর্ঘদিনের আধিপত্য শেষ, নেপালের নতুন ‘বন্ধু’ চিন]
The post হাওয়াইয়ে মিসাইল হামলার সতর্কতা, প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি স্থানীয়দের appeared first on Sangbad Pratidin.