সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানকে ফের ঋণ মঞ্জুর করল আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিল আইএমএফ। ভারতের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। অতীতেও বিপুল ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানকে ফের ঋণ মঞ্জুর করার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে আইএমএফের ভূমিকা নিয়ে। এই নিয়ে ৩৫ বছরে ২৮ বার এই টাকা পেল পাকিস্তান।
পাকিস্তানের অর্থনীতির কোমর ভেঙেছে বহু আগেই। গত কয়েক বছর ধরে আইএমএফের ঋণের উপর টিকে রয়েছে শাহবাজের দেশ। সেই ধারা অব্যাহত রেখে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে ফের আইএমএফের কাছে যায় ইসলামাবাদ। তবে সন্ত্রাসের মদতদাতা পাকিস্তানকে যাতে এই ঋণ না দেওয়া হয় তার জন্য স্পষ্ট যুক্তি দেওয়া হয় ভারতের তরফে। অভিযোগ, করা হয় অতীতেও একাধিকবার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। তবে সেই অর্থ তারা সঠিক কাজে ব্যবহার করেনি। সরাসরি সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানের আশঙ্কা প্রকাশ করে ভারত জানায়, এই অর্থ পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদে অপব্যবহার করতে পারে ফলে এই ঋণ কোনওভাবেই দেওয়া উচিত নয়। ঋণ গ্রহণের পর যে সকল শর্ত মেনে চলা উচিত অতীতেও সে নিয়ম লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। ফলে এবারও এই অর্থ অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত আপত্তি জানালেও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটের ফলাফল ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। পাশাপাশি এই ভোটাভুটিতে যেহেতু বিপক্ষে ভোট দেওয়া যায় না, তাই ভোট থেকে বিরত থাকে ভারত।
এদিকে ঋণ মঞ্জুর হওয়ার পর পাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, 'আইএমএফের তরফে পাকিস্তানকে এক মিলিয়ন ডলার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। ভারত এই ঋণে আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত ভারতের দাবি ব্যর্থ হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি করেছে এবং দেশটি উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে।' যদিও এই উন্নতির নমুনা এর আগেও দেখেছে বিশ্ব। সন্ত্রাসবাদে লাগাম টানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এর আগেও ঋণ নিয়েছিল পাকিস্তান। যদিও বাস্তবে সে সন্ত্রাসে কোনও লাগাম পড়েনি তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। বিশ্বকে দেখাতে হাফিজ সইদ-সহ অন্যান্য জঙ্গিদের জামাই আদরে জেলে রেখেছে সেখানকার সরকার। লস্কর, আল কায়দা, জইশ ই মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠন খাতায় কলমে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ হলেও ঘুরপথে এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলিকে অর্থের যোগান দিয়ে চলেছে শাহবাজ সরকার। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলা তা আরও একবার প্রমাণ করেছে।
পাকিস্তানকে এই ঋণ দেওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদকে মদত যোগান দেশকে ফের আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করার ঘটনা বিশ্বের কাছে অত্যন্ত বিপজ্জনক বার্তা পাঠায়। এই ঘটনা আইএমএফের মতো সংস্থার সুনামকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক মূল্যবোধের উপহাস।