সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নজরে চিন! সামরিক ক্ষেত্রে বন্ধু রাশিয়ার সঙ্গে বড় চুক্তি করতে চলেছে ভারত। সূত্রের খবর, 'ভোরোনেজ' নামে এক রাডার মস্কোর থেকে কিনবে দিল্লি। যা প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতিপক্ষের উপর নজরদারি চালাতে সক্ষম। 'শত্রু'র প্রতিটা পদক্ষেপ ধরা পড়বে সহজেই। অত্যাধুনিক এই রাডার হাতে এলে নিঃসন্দেহে আরও শক্তি বাড়বে ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের।
রবিবার তিনদিনের সফরে রাশিয়া গিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মস্কোয় তিনি আলোচনায় বসেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোউসভের সঙ্গে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দুদেশের সহযোগিতা আরও মজবুত করা নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই বৈঠকেই 'ভোরোনেজ' রাডার কেনা নিয়ে কথা বলেন রাজনাথ। সময় নষ্ট না করে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চারশো কোটি মার্কিন ডলারের এই চুক্তি সেরে ফেলতে চান তিনি।
কী বিশেষত্ব রয়েছে এই রাডারের? জানা গিয়েছে, রাশিয়ার 'আলমাজ-আন্তে কর্পোরেশন' নামে একটি সংস্থা রয়েছে যারা যুদ্ধবিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা এবং রাডার তৈরির জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এখানেই তৈরি হয় 'ভোরোনেজ'। এক সঙ্গে অন্তত ৫০০টি বস্তু চিহ্নিত করার ক্ষমতা রয়েছে অত্যাধুনিক এই রাডারের। শুধু তাই নয়, সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত প্রতিপক্ষের উপর নজরদারি চালাতে সক্ষম এই রুশ 'দিব্যচক্ষু'। এর তীক্ষ্ণ নজর থেকে বাদ পড়বে না কোনও ব্যালিস্টিক মিসাইল, ফাইটার জেট, আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (ICBMs)। রাশিয়ার দাবি, 'ভোরোনেজ' সহজেই ধরে ফেলতে পারবে স্টেলথ মিসাইল (রাডারে প্রায় অদৃশ্য)- এর গতিবিধিও। ফলে লাল ফৌজের দাদাগিরি রুখতে এখন 'ভোরোনেজ'ই পাখির চোখ নয়াদিল্লির। কারণ শুধু চিন নয়, বিপদ রয়েছে পাকিস্তান থেকেও। ভারত মহাসাগর থেকেও ধেয়ে আসতে পারে লালফৌজের শক্তিশেল।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময় ভারত মহাসাগরে গতিবিধি বেড়ে গিয়েছে চিনের যুদ্ধজাহাজের। কমিউনিস্ট দেশটির দাবি, ওইসব জাহাজ শুধুমাত্র গবেষণার জন্যই সাগরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ভারতের হাঁড়ির খবর খুঁজে বের করাই যে ওই চিনা রণতরীগুলোর উদ্দেশ্য তা নিশ্চিত ভারতীয় নৌসেনা। অন্যদিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী, লাদাখ সীমান্তেও সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে বেজিং। যা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই মুহূর্তে ভারত উপমহাদেশে কৌশলগত অবস্থান মজবুত করছে চিন। তাই তাদের প্রতিটা পদক্ষেপের খুঁটিনাটি মুহূর্তের মধ্যে জানতে রুশ রাডারেই ভরসা রাখছে দিল্লি।