সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যালেস্টাইনের সমর্থনে মিছিলে হাঁটা, স্লোগান তোলা, কখনও আবার হামাসের হয়ে গলা চড়ানো - একাধিক সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতীয় পড়ুয়ার ভিসা বাতিল করে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তরফে তা জানিয়ে সময় দেওয়া হয়েছিল ১১ মার্চ পর্যন্ত। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর উন্নয়ন বিভাগে গবেষণারত ওই ছাত্রী ভিসা পুনর্নবীকরণের জন্য হাজারবার আবেদন করেছিলেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ওই বিভাগটি সরাসরি মার্কিন আভ্যন্তরীণ সুরক্ষা দপ্তরের (Department of Homeland security) অধীনে। আর সেই কারণেই এক্ষেত্রে এত কড়া পদক্ষেপ। এসবের জেরে 'ঘাড়ধাক্কা' দিয়ে বের করার অপেক্ষা না করে ওই ছাত্রী নিজেই ছাড়লেন আমেরিকা।
ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধের মাঝে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালেস্টাইন-পন্থী বিক্ষোভ নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যে প্যালেস্টাইনকে 'মুক্ত' করার দাবিতে পোস্টার, প্ল্যাকার্ড হাতে পড়ুয়াদের মিছিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। কারা এসব করছে, তা মার্কিন প্রশাসনের কড়া নজরদারির আওতায় থাকে। সেভাবেই রঞ্জনী শ্রীনিবাসন নামে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি-র ছাত্রী নজরে পড়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, হামাস জঙ্গিদের সমর্থন করে সে নানা কার্যকলাপ করছে।
মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগের সচিব ক্রিস্টি নোয়েম বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ''রঞ্জনী শ্রীনিবাসন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হামাসের কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। মার্চ ৫, ২০২৫এ আমাদের বিভাগ তার ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এজেন্সির অ্যাপ থেকে আমরা তার গতিবিধিতে নজর রেখেছি। ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ১১ তারিখ সে নিজেই আমেরিকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।'' এক্স হ্যান্ডলে তিনি পোস্ট করেছেন, ''পড়াশোনার জন্য আমেরিকায় এসে পড়ুয়ারা থাকবেন, গবেষণার কাজ করবেন, সেটা আমাদের কাছেই প্রাপ্তির। কিন্তু যখন দেখা যায়, তাঁরা সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত, তখন তাঁদের এদেশে থাকার অধিকার নেই। আমার এটা দেখে ভালো লাগছে যে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী নিজেই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তাঁকে ফেরত পাঠাতে হচ্ছে না।''
ট্রাম্প মসনদে বসার পর অবৈধভাবে আমেরিকায় বসবাসকারীদের নিয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। একেবারে অপরাধীদের মতো হাতে-পায়ে শিকল বেঁধে সেনা বিমানে তাঁদের ফিরতে হয়েছে। এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী, লজ্জাজনক বিষয়টি এড়াতেই হয়ত রঞ্জনী নিজেই ফেরার উদ্যোগ নিয়েছেন। তাতে অন্তত অপমানের হাত থেকে বাঁচা যাবে।