সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইয়েমেনে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার প্রাণ বাঁচাতে সমস্ত রকম সাহায্যের বার্তা দিল বিদেশমন্ত্রক। মঙ্গলবার প্রিয়ার পরিবারকে আশ্বাস দিয়ে বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানালেন, ভারত সরকার তাঁর মৃত্যুদণ্ড রদ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
স্বামীকে হত্যার অপরাধে ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন নিমিশা । ২০১৮ সালে এই মামলায় তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনায় ইয়েমেনের আদালত। তাঁর প্রাণ বাঁচাতে এত বছর ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে এসেছে নিমিশার পরিবার। তবে সব আশায় জল পড়ে যায় গত সোমবার। প্রবাসী ভারতীয় ওই যুবতীর প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে পৌঁছলে তা খারিজ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রশিদ মহম্মদ আল আলিমি। আগামী এক মাসের মধ্যেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড রদ করতে তৎপর হল বিদেশমন্ত্রক। জয়সওয়াল জানান, 'ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার সাজা সম্পর্কে আমরা অবগত। নিমিশার পরিবার তাঁর প্রাণরক্ষার জন্য সমস্তরকম চেষ্টা করছে। সরকার ওই পরিবারের পাশে আছে এবং এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করছে।' ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট যাতে প্রিয়াকে প্রাণভিক্ষা দেন তার জন্য সরকারের তরফে আবেদন জানানো হবে।
কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনের এক হাসপাতালে কাজ করতেন। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী ও কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা সেখানে থেকে যান। উদ্দেশ্য ছিল ইয়েমেনে ক্লিলিক খোলা। সেখানে তালাল আবদো মেহদি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। দুজন মিলে সেখানে এক ক্লিনিক খোলেন। পরে এই ক্লিনিকের অংশীদারিত্ব নিয়ে অসান্তি বাধে দুজনের মধ্যে। নিমিশার পাসাপোর্ট কেড়ে নেয় সে। পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে কোনও ফল না হওয়ায়। অন্য পথে হাঁটেন তিনি।
এর পর ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই ওই ব্যক্তিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন নিমিশা প্রিয়া। উদ্দেশ্য ছিল, অভিযুক্ত ঘুমিয়ে পড়লে পাসপোর্ট উদ্ধার করবেন। তবে ওষুধের ওভারডোজের কারণে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। এই অবস্থায় একজনের সাহায্য নিয়ে মেহদির দেহ টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন নিমিশা। এবং ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান। বিচারপর্বে ২০১৮ সালে ইয়েমেনের আদালত নিমিশাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তাঁর প্রাণরক্ষায় সবরকম চেষ্টা করেন নিমিশার মা প্রেমা কুমারী। ভারত সরকারও তাঁর পাশে দাঁড়ায়। এমনকি সাজার বিরুদ্ধে বিগত কয়েক বছর ঘরে অনেকগুলি আন্তর্জাতিক সংগঠন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।