সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন বছরেও গাজায় রক্তক্ষয়ী হামলা অব্যাহত ইজরায়েলের। আল জাজিরা সূত্রে খবর, দক্ষিণ গাজার 'সেফ জোনে' হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) বিরুদ্ধে। প্রাণ হারিয়েছে মহিলা ও শিশু-সহ অন্তত ১১ জন। আহতও বেশ কয়েকজন। বোমাবর্ষণের জেরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পগুলো। সেখানেই শেষ সম্বল হাতড়ে বেরাচ্ছেন আশ্রয়হীন প্যালেস্তিনীয়রা।
জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার আল মাওয়াসি এলাকায় হানা দেয় ইজরায়েলি সেনা। সেখানে বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছে। হামাস জঙ্গিদের খোঁজে সেখানে হামলা চালানো হয়। গাজার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের খবর অনুযায়ী, এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন শিশু, দুই মহিলা-সহ ১১ জনের। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৫। প্রবল ঠান্ডায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। শরণার্থী শিবিরে আঘাত হানায় জিনিসপত্র সমস্ত কিছুই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শীতের হাত থেকে বাঁচতে জামাকাপরও নেই সেখানকার প্যালেস্তিনীয়দের।
সংবাদমাধ্যমে ওই জায়গাগুলোকে 'সেফ জোন' বলা হলেও ইজরায়েলের দাবি সেখানে জেহাদিদের ডেরা ছিল। তাই আক্রমণ শানানো হয়েছে। এক বছর পূর্ণ হয়ে গিয়েছে গাজা যুদ্ধের। হামাস নিধনে গোটা গাজার নানাপ্রান্ত গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েল। অভিযান শুরু করার পর থেকে ইহুদি দেশটির সেনার অভিযোগ ছিল, গাজার বিভিন্ন হাসপাতাল, স্কুল, ধর্মীয়স্থানে লুকিয়ে রয়েছে হামাস জঙ্গিরা। সেখান থেকেই তাঁরা নানা সন্ত্রাসী কাজকর্ম করছে, সেনার উপর হামলা চালাচ্ছে। ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে এই অভিযোগের সাপেক্ষে যুক্তিও দিয়েছে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই জানা গিয়েছিল, যুদ্ধবিরতি ও পণবন্দিদের মুক্তি নিয়ে চুক্তি করতে কয়েকধাপ এগিয়েছে হামাস ও ইজরায়েল। দুপক্ষের আলোচনায় মিলেছে সবুজ সংকেত। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর যুদ্ধবিরতির জন্য লাগাতার মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিশর, সৌদি আরবের মতো দেশ। গাজা যুদ্ধে ইজরায়েলের পাশে থাকলেও যুদ্ধবিরতির বৈঠকে নিয়মিত যোগ দিচ্ছে আমেরিকা। এবারেও মিশরের কায়রোতে আলোচনায় বসেছিল হামাস ও ইজরায়েলের প্রতিনিধিরা। দুপক্ষের বৈঠক সদর্থকও হয়। কিন্তু ফের মতবিরোধ শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে। যুদ্ধ থামানো নিয়ে একে অপরকে দুষছে হামাস ও ইজরায়েল। ফলে লড়াই যে এখনই থামছে না তা ফের একবার স্পষ্ট হয়ে গেল এই ঘটনায়।