সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কড়া নিরাপত্তায় শেষ হয়েছে নেপালের সাধারণ নির্বাচন। দেশজুড়ে চাপা উত্তেজনার মধ্যেই চলছে ভোটগণনা। হিমালয়ের কোলে ছোট্ট দেশটির মসনদে কে বসবে সেই দিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে ভারত। বুধবার পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান মিলেছে তাতে দেখা গিয়েছে, ভোটের লড়াইয়ে আপাতত এগিয়ে রয়েছে শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট। ফলে কিছুটা স্বস্তিতে নয়াদিল্লি।
গত রবিবার, ২০ নভেম্বর নেপালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৭৫ আসন বিশিষ্ট নেপাল পার্লামেন্টের ১৬৫টি আসনে হয় ভোটগ্রহণ। জাতীয় আইনসভার বাকি ১১০ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হবে সমানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে। এছাড়া, প্রাদেশিক আইনসভার ৫৫০ টি আসনের মধ্যে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হবেন ৩৩০ জন প্রার্থী। বাকি ২২০টি আসনের প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে সমানুপতিক নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে। বুধবার পাওয়া তথ্য মতে, ৭০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট। সপ্তমবারের জন্য দাদেলধুরা আসনে জয়ী হয়েছেন দেউবা। অন্যদিকে, বিরোধী কে পি শর্মা ওলির জোট এগিয়ে ৪০টি আসনে। বলে রাখা ভাল, এখনও চূড়ান্ত ফলাফল আসতে কিছুটা সময় লাগবে।
[আরও পড়ুন: নেপাল, চিনের মতো কাশ্মীরও পৃথক রাষ্ট্র! বিহারের প্রশ্নপত্র ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক]
উল্লেখ্য, নেপালের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার দল নেপালি কংগ্রেসের ‘ভারতপ্রীতি’ অজানা নয়। ফলে কাঠমান্ডুতে দেউবাই ক্ষমতা দখল করুক এমনটা চাইছে দিল্লি বলে বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এবার ভোটের লড়াইয়ে বাজিমাত করতে পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ড-র দল নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী সেন্টার)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন দেউবা। বলে রাখা ভাল, নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা মাওবাদী নেতা প্রচণ্ডর সঙ্গে অতীতে দিল্লির ঠোকাঠুকি কম হয়নি। তাঁর জমানায় কাঠমান্ডুতে বেজিংয়ের প্রভাব ছিল লক্ষণীয়। অনেকেই মনে করেন, কলকাঠি নেড়ে প্রচণ্ডকে গদিচ্যুত করে দিল্লি। কিন্তু ওলিকে বাগে আনতে আপতত কিছুটা সমঝোতার পথে হেঁটেছেন তিনি। এছাড়া, এই জোটে রয়েছে জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র বাবুরাম ভট্টরাইয়ের দল নেপাল প্রজাতান্ত্রিক পার্টিও।
অন্যদিকে, গোড়া থেকেই ভারতবিরোধী প্রচারের মাধ্যমে হওয়া গরম করে রেখেছিলেন কে পি শর্মা ওলি (K P Sharma Oli)। তাঁর দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (ইউনিফায়েড মার্কসিস্ট-লেনিনিস্ট) শুরু থেকেই সীমান্ত নিয়ে সংঘাতের পথে হাঁটার বার্তা দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে ওলি বলেছিলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় এলে ভারতের ‘গা-জোয়ারি’ চলতে দেওয়া হবে না। ওলি আরও দাবি করেন, তিনি মসনদে বসলে ভারত সীমান্ত লাগোয়া কালাপানি (Kalapani), লিম্পিয়াধুরা ও লিপুলেখে নেপালের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তাই কুটনীতিকদের মতে, ওলি ক্ষমতায় ফিরুন এমনটা কিছুতেই চাইছে না ভারত।