সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর বদলা নিতে মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) অভিযান চালায় ভারতীয় সেনা। তারপরই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ দাবি করেন, ভারতের হামলার জবাব দিয়েছে পাকিস্তানও। জানান, ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়েছে পাক সেনা। তার মধ্যে তিনটি রাফালে। কিন্তু পাকিস্তান এর স্বপক্ষে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। এবার আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে মুখ খুললেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সিএনএন-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে আসিফ বলেন, “ভারতীয় সোশাল মিডিয়াতেই যুদ্ধ বিমানগুলির ধ্বংসাবশেষের ছবি দেখা গিয়েছে।” তাঁর এই মন্তব্যের পরই বিতর্ক আরও বেড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, দেশের একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কীভাবে এই মন্তব্য করতে পারেন? শুধু আসিফ নয়, পাক সরকারের তরফ থেকেও বুধবার একই দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সে দেশের কোনও মন্ত্রীই এর স্বপক্ষে প্রমাণ দিতে পারেননি। উলটে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রচারের জন্য আঙুল উঠেছে পাকিস্তানের দিকেই।
ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর ফ্যাক্ট চেকিং বিভাগ জানায়, পাকিস্তানি সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি থেকে একটি বিমানের ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রচার করা হচ্ছে। দাবি করা হচ্ছে, সেটি একটি রাফালে যুদ্ধ বিমান। কিন্তু আসলে সেটি সম্পূর্ণ ভুয়ো তথ্য। এটি ২০২১ সালের একটি বিমান দুর্ঘটনার ছবি। অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) পর ইচ্ছাকৃতভাবে তা প্রচার করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও খবরটির 'ফ্যাক্ট চেক' করে। সেখানেও তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
উল্লেখ্য, সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেছেন। মমতা বলেন, “দেশের স্বার্থে সকলকে এই সময় কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে। কোনও বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করা যাবে না। তাই এই সময় কোনও রকম উসকানিমূলক বা বিভ্রান্তিমূলক প্রচার বরদাস্ত করা হবে না, হলে অ্যাকশন নেওয়া হবে।” বলা বাহুল্য, এই সময় সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এই হামলায় বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিনর সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা অপারেশনের নজরদারিতে ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই হামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিদেশসচিব ও সেনা। তাতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়েছে। যে সব জায়গায় বসে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার পরিকল্পনা হয়েছিল এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত আঘাত হেনেছে। তারপরই সীমান্তে নির্লজ্জতার সব সীমা অতিক্রম করে নিরীহ নাগরিকদের আক্রমণ করছে পাকিস্তান।
