সুমনা আদক: বাঙালির ঘরে মহালয়া আসার পরই দুগ্গা আসে। বসন্তের অপরাহ্ন বেলায় শারদীয়ার সুর ভেসে বেড়ায় ব্রিটেনের (UK) বাঙালি পাড়ায় পাড়ায়। কর্মসূত্রে বিদেশে পাড়ি দেওয়া বাঙালির আবেগের আরেক নাম দুর্গাপুজো (Probashe Durga Puja)। এই দেশে এতগুলো শারদ পেরিয়ে একটা কথা মনে পড়ে দুর্গাপুজোর আবেগ, আনন্দের কাছে পৃথিবীর যাবতীয় সৌন্দর্য তুচ্ছ হয়ে যায় এক লহমায়।
সময়টা ২০১৮ লন্ডনের (London) কয়েকজন প্রবাসী বাঙালি ভারতীয়দের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ‘এসেক্স পুজো কমিটি’র প্রথম দুর্গাপুজো। আড়ম্বর না থাকলেও পুজোর শুরুটা ছিল বেশ চমকপ্রদ। দেখতে দেখতে এতগুলো বছর পেরিয়ে নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এসেক্স (Essex) পুজো কমিটির সদস্যরা নিজের প্রাণের পুজোকে ব্রিটেনের মাটিতে এক বিশেষ জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছেন – এটাই তাদের বিশেষ গর্ব।
[আরও পড়ুন: ৩২ ইঞ্চির টিভি-সাউন্ড বক্স-কম্পিউটার বসেছে প্রাথমিক স্কুলে, চালু স্মার্ট ক্লাস]
এসেক্স শহরতলির ‘গিরডিয়া’ পার্ক ক্রিকেট প্রাঙ্গনে ষষ্ঠী থেকে দশমী প্রত্যেক বছরের মতো এবছরেও ‘এসেক্স কমিটি’র পুজোতে থাকছে বিশেষ অভিনবত্ব। মাতৃ প্রতিমা আসছে কুমোরটুলি থেকে, কলাবউ স্নান থেকে শুরু করে, ১০৮ টা পদ্ম দিয়ে মায়ের বোধন, অঞ্জলি, কুমারী পুজো, ধুনুচি নাচ, সিঁদুরখেলা – সবই হবে পঞ্জিকা মেনে। প্রত্যেক বছর সাগর পারে এক টুকরো কলকাতাকে (Kolkata) নিয়ে এসে হাজির করেন এসেক্স কমিটির সদস্যরা।
[আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীর চোখে সুচ ফুটিয়ে খুন! কাঠগড়ায় স্ত্রী ও প্রেমিক]
পুজো মণ্ডপের অন্দরে অসুরনাশিনী তখন সাক্ষাৎ মা অন্নপূর্ণার পূর্ণ রূপে বিরাজমান। এছাড়া মণ্ডপের সাজসজ্জায় থাকবে সাবেকিয়ানার বিশেষ ছাপ। রসনাপ্রিয় বাঙালির পুজোর খাওয়াদাওয়ার মেনুতে (Menue) থাকছে বাঙালি খাবারের জমজমাট সব পদ। সবশেষে হবে মিষ্টিমুখের পালা সেখানে থাকবে আমাদের সকলের প্ৰিয় রসগোল্লা (Rasogolla)। এসেক্সের দুর্গাপুজোর পরিবেশটা যেন বাঙালির বৈঠকখানা, সাদামাটা ঘরোয়া আমেজ নিয়ে সাজোসাজো রব।
সারাদিনের আনন্দের পরে সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের আসরে হরেক রকম গানের নাচের আসর মাতিয়ে রাখবে সকলকে। পুজো কমিটির উদ্যোক্তা পেশায় ডক্টর অনির্বাণ দাঁ বলেন, সমস্ত ব্রিটেনের একাধিক দুর্গাপুজোর মধ্যে এসেক্স কমিটির মা দুর্গার অনন্য রূপে মুগ্ধ সকলে। এখানকার সাবেকিয়ানা আকর্ষণ করে ব্রিটেনের বাঙালিদের, পুজোর পাঁচটা দিন বেশ হইহই করেই কেটে যায় এক ছাদের নিচে সকলকে একসঙ্গে পাওয়া – এমন পুজোর জুড়ি মেলা ভার। সবশেষে মাকে বরণ করে তাঁর বিদায়বেলায় বিষন্নতা মনকে ভারাক্রান্ত করলেও একটাই আশা, আসছে বছর আবার হবে। সবমিলিয়ে বলা চলে, এসেক্স কমিটির এবছর দুর্গাপুজো হতে চলেছে বেশ জমজমাট।