সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পের চোখরাঙানিকে থোড়াই কেয়ার নয়াদিল্লির। সূত্রের খবর, আগামী দু'মাসের জন্য রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানির বরাত দিয়েছে ভারতের দুই তৈল শোধন সংস্থা। গত কয়েকমাসে রুশ তেলের উপর ছাড়ের পরিমাণ কমানো হয়েছিল। সেই ছাড়ের পরিমাণ ফের বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সূত্রের খবর। বেশি ছাড় পেতেই ফের হু হু করে বাড়তে চলেছে ভারতে রুশ তেলের আমদানি।
গত মাসে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তারপর রুশ তেল আমদানির 'অপরাধে' আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপে ভারতের উপর। তারপরেই খবর ছড়ায়, মূলত রয়টার্সকে উদ্ধৃত করে নানা সূত্র মারফত খবর ছড়ায়, এবার রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেবে ভারত। তার কারণ, রুশ তেলের দামে এতদিন পর্যন্ত যতটা পরিমাণ ছাড় মিলছিল সেটা বর্তমানে কমে গিয়েছে। তাছাড়া আমেরিকা সরাসরি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ভারতের রুশ তেল কেনা নিয়ে। এই যুক্তি দেখিয়ে রয়টার্সের তরফে বলা হয়, ভারতের চারটি শোধনাগার নাকি গত এক সপ্তাহে রুশ তেল কেনা বন্ধ করে দিয়েছে। এই চারটি শোধনাগার হল, ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ম্যাঙ্গালোর রিফাইনারি অ্যান্ড পেট্রো কেমিক্যালস।
রয়টার্সের এই খবর ছড়াতেই তুমুল জল্পনা শুরু হয়, তাহলে কি ট্রাম্পের চাপের মুখে নতি স্বীকার করল ভারত? তবে সেসময়েই কেন্দ্রের সূত্র মারফত বলা হয়, আগেই বিদেশমন্ত্রক স্পষ্ট করেছে, শক্তিসম্পদ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের কী অবস্থান। রুশ তেল কেনা বন্ধ হয়েছে, এমন কোনও খবর নেই কেন্দ্রের কাছে। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, ‘শক্তি সম্পদের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান সকলেই জানে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী, জাতীয় স্বার্থ এবং বাজারের পরিস্থিতি দেখে শক্তিসম্পদ আমদানি করা হয়।”
এহেন পরিস্থিতিতে বুধবার জানা যায়, সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসের জন্য বিপুল পরিমাণ তেলের বরাত দেওয়া হয়েছে। তার কারণ সম্প্রতি ব্যারেলপ্রতি তিন ডলার ছাড় দেওয়া হয়েছে উরালের তেলে। হিসাব অনুযায়ী, এই ছাড়ের অঙ্কটা ৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত, ভারত প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি এবং ব্যবহার করে। ফলে প্রতি ব্যারেলে তিন ডলার ছাড়টাই শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য বিরাট অঙ্কের সাশ্রয় হবে। দেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার থেকেও ব্যয় কমবে। এই মুনাফার বিষয়গুলি মাথায় রেখেই রাশিয়া থেকে তেল কেনার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিল ভারত। তবে এই নিয়ে সরকারিভাবে কোনও পক্ষই কিছু জানায়নি।
