সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন বছর পূর্ণ হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের। কবে এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ থামবে তার উত্তর এখনও অধরা। সাধারণ মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি দুদেশই হাজার হাজার সেনা হারাচ্ছে। কিন্তু এই মুহূর্তে রুশ ভূখণ্ডের কার্স্ক অঞ্চলে আগুন ঝরাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনা। বন্ধু রাশিয়াকে সাহায্য করতে এসে প্রাণ দিচ্ছে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরাও। যুদ্ধের অন্যতম ফ্রন্ট হয়ে উঠেছে এই অঞ্চল। এমনটাই জানালেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
দীর্ঘ সময় ধরে চলা এই লড়াইয়ে এখনও পর্যন্ত কিয়েভ দখল করতে পারেনি রুশ ফৌজ। এদিকে, অস্ত্রের জোগান কমে এলেও পালটা মার দিয়ে রণক্ষেত্রের ছবি বদলে দিয়েছে জেলেনস্কির 'লিলিপুট' বাহিনী। গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কার্স্কে ঢুকে পড়ে হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনা। তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে রুশ ফৌজকে। তাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন। প্রায় ১২ হাজার সেনা পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখন সেই ফৌজেরই বেহাল দশা। শনিবার জেলেনস্কি জানিয়েছেন, কার্স্কে উত্তর কোরিয়া ও রুশ সেনা ভয়ংকর মূল্য চোকাচ্ছে। ব্যাপক হারে প্রাণ হারাচ্ছে তাদের সেনা।
এই অঞ্চল যে এখন যুদ্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট হয়ে উঠেছে তা উল্লেখ করে এদিন জেলেনস্কি বলেন, "কার্স্কের মাখনোভকা গ্রামে আমাদের কাছে শত্রুপক্ষ হেরে গিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সেনাও তাদের সাহায্য করতে পারছে না।" এনিয়ে ইউক্রেনীয় কমান্ডার অ্যালেকজান্ডার সিরস্কি বলেন, কার্স্কে ভয়ানক লড়াই চলছে। অন্যদিকে, রাশিয়া জানিয়েছে, এই অঞ্চলে 'শত্রুপক্ষ'কে মার দিতে সৈন্যের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে।
বলে রাখা ভালো, ইউক্রেনের সেনার পাশাপাশি কিমের বাহিনীই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে রুশ ফৌজের। কয়েকদিন আগেই খবর মিলেছিল তাঁদের হাতেই নিহত হয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিনের জওয়ানরা। জানা যায়, কার্স্কে গুলি, গোলা-বারুদের কান ফাটানো আওয়াজ, হট্টগোলেই নাকি বিভ্রান্ত হয়ে যায় উত্তর কোরিয়ার ফৌজ। রুশ সেনার কমান্ড বুঝতে ভুল করে তারা। তাই বন্ধুকেই ‘শত্রু’ ভেবে এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে কিমের সেনা। যুদ্ধের ময়াদানেই প্রাণ হারান রাশিয়ার ৮ জওয়ান। এই ঘটনায় চরম বিপাকে পড়েছে পুতিন বাহিনী। একদিকে, রণক্ষেত্রে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে, কিমের সেনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। কৌশল অনুযায়ী যুদ্ধের ময়দানে তাদের সাজাতে রুশ সেনাপ্রধানদের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে ভাষা। একে অপরের ভাষা বুঝতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। আর এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করেছে ইউক্রেন।