সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেনা-আধাসেনার লড়াইয়ে সুদান যেন নরককুণ্ড! আট মাস ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে উলুখাগড়ার মতো প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেদেশের সেনাবাহিনীকে কোণঠাসা করে গুরুত্বপূর্ণ দারফুর প্রদেশের দখল নিতে চলেছে আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (RSF) বলে খবর।
সুদানে (Sudan) ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল- আবদেল আল ফতা আল বুরহান ও জেনারেল মহম্মদ হামদান দাগালো। প্রথম জন সুদানের সেনাপ্রধান এবং ২০১৯ থেকে দেশের সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থার জন্য ভারপ্রাপ্ত কাউন্সিলের প্রধান। দ্বিতীয় জন দেশের আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর প্রধান তথা কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য। দুজন জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে। এপ্রিলের ১৫ তারিখ থেকে চলা লড়াইয়ে যুযুধান দুই পক্ষের কেউই সংঘর্ষবিরতি মানছে না। রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে গত কয়েক দিন পশ্চিমের দারফুর প্রদেশে কয়েকশো মানুষ নিহত হয়েছেন। রাজধানী খারতুমেও প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই।
[আরও পড়ুন: জেহাদের নামে মুসলমানদেরই হত্যা! কাবুল বিস্ফোরণে নিহত শিয়া সম্প্রদায়ের ৭]
বিবিসি সূত্রে খবর, আফ্রিকার দেশটিতে চলা এই গৃহযুদ্ধের জেরে ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে অন্তত ৬০ লক্ষ মানুষ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই পড়শি দেশ চাদে আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে, দারফুরে গণহত্যা চালাচ্ছে ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ ও তাদের সঙ্গী আরব মিলিশিয়াগুলো। অমুসলিমদের নিশানা করছে তারা। ধর্ষণকে যুদ্ধের হাতিয়ারের মতো ব্যবহার করছে তারা। পশ্চিম দারফুরের রাজধানী এল জেনেইনায় ফৌজের সদরদপ্তর দখল করে নিয়েছে আধাসেনা। একটি শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়ে ৮০০ জনকে হত্যা করেছে আরএসএফ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং লিবিয়ার পাশাপাশি আরএসএফ-কে রুশ ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনারও সহায়তা করেছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে তৎকালীন অখণ্ড সুদানের মুসলিম ও খ্রিস্টানদের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। এর পর আরব মুসলিম প্রধান সুদান ভেঙে সৃষ্টি হয়েছিল খ্রিস্টান দেশ দক্ষিণ সুদান।