সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জুলাই বিক্ষোভে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। মহম্মদ ইউনুসের 'ক্যাঙারু আদালতের' সেই রায়ের নিন্দায় সরব হল রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন। পাশাপাশি প্রশ্ন তোলা হল বাংলাদেশের ন্যায়বিচার নিয়ে। সবমিলিয়ে আগে থেকে স্ক্রিপ্ট সাজিয়ে হাসিনা ও তাঁর সঙ্গীদের ফাঁসিকাঠে ঝোলানোর সমস্ত প্রক্রিয়া সারা হলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে সমালোচনার মুখে 'ইউনুসের আদালত'।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদউজ্জামান খানের ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন। এই বিভাগের মুখপাত্র রবিনা সামদাসানি এক বিবৃতিতে বলেন, "গতবছর আন্দোলন দমনের নামে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল, এবং যারা সেই ঘটনার শিকার হন তাঁদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ সময়।" পাশাপাশি তিনি আরও জানান, "বাংলাদেশের আদালতে চলা বিচারপর্ব সম্পর্কে রাষ্ট্রসংঘ বিশেষ অবগত নয়। তবে এই বিচারপ্রক্রিয়া বিশ্বাসযোগ্যভাবে হওয়া উচিৎ। কেউ আন্তর্জাতিক অপরাধে অভিযুক্ত হবে তার বিচার ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডেই হওয়া উচিৎ।"
পাশাপাশি রবিনা আরও জানান, "এই বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন অভিযুক্ত সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর অনুপস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে। ফলে যে কোনও পরিস্থিতিতেই রাষ্ট্রসংঘ এই বিচার প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে। আমরা আশা করি যে বাংলাদেশ সততা ও ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।"
রাষ্ট্রসংঘের পাশাপাশি হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামিনেস্টি। সংস্থার মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড বলেন, ‘জুলাই বিক্ষোভের সময় যে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে হওয়া উচিৎ। কিন্তু এই বিচার ও সাজা কোনওটাই সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত হয়নি। যারা সেই নির্মম ঘটনার শিকার হয়েছিলেন তাঁদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। অথচ মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও গুরুতর করে তোলে। এটি শাস্তি সবচেয়ে নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর। কোনও ন্যায়বিচার ব্যবস্থায় এর (মৃত্যুদণ্ডের) স্থান নেই।’
