সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাশিয়া সফরের পর এবার ভারত সফরে ভ্লাদিমির পুতিন। যদিও তাঁর ভারত সফরের দিনক্ষণ এখনও প্রকাশ্যে না এলেও, তিনি যে নয়াদিল্লি আসছেন তা নিশ্চিত করেছে ক্রেমলিন। ইউক্রেন যুদ্ধ ও পরমাণু নীতি বদলের মাঝেই পুতিনের এই ভারত সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
রাশিয়ার প্রশাসনিক দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমাত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ''শীঘ্রই ভারত সফরে যাবেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর ভারত সফরের দিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। এই বিষয়ে আলোচনা চলছে।'' এমনিতে নরেন্দ্র মোদি ও ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক কারও অজানা নয়। গত অক্টোবর মাসে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়া গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত জুলাই মাসেও ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মস্কো যান তিনি। এবার দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারতে আসছেন পুতিন। পাশাপাশি, ইউক্রেনের সঙ্গে চলতে থাকা যুদ্ধ নিয়েও ভারতের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে পুতিনের। অনুমান করা হচ্ছে, জটিল এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মোদিকে পাশে চাইছেন পুতিন।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলতে থাকা যুদ্ধ এক হাজার দিন পার করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা-সহ ন্যাটো দেশগুলি রাশিয়া একঘরে কোমর বেঁধে নেমেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারতের আরও কাছে এসেছে রাশিয়া। আলোচনার মাধ্যমে শান্তির পক্ষে সওয়াল করলেও। পুরোন বন্ধুকে হতাশ করেনি ভারত। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে রুশ তেল কিনছে নয়াদিল্লি। রাষ্ট্রসংঘে মস্কো বিরোধী প্রস্তাবে ভোট দেয়নি ভারত। তবে যুদ্ধ থামাতে বার বার আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন মোদি।
এদিকে দিনে দিনে আরও গুরুতর আকার নিচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। বাইডেন প্রশাসনের তরফে ইউক্রেনকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে দূরপাল্লার মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের। পালটা পরমাণু নীতিতে বদল এনেছে রাশিয়া। নয়া নীতিতে বলা হয়েছে পরমাণু শক্তিধর কোনও রাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র যদি রাশিয়ার মাটিতে আঘাত হানে সেক্ষেত্রে পরমাণু শক্তিধর নয় এমন রাষ্ট্রের উপরও পরমাণু হামলা চালাতে পারবে রাশিয়া। পরমাণু নীতি এমনভাবে করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, ন্যাটো সদস্যভুক্ত কোনও দেশ যদি এই ধরনের হামলা চালায় তাহলে রাশিয়া এই হামলাকে ন্যাটোর হামলা হিসেবে দেখবে। অর্থাৎ মার্কিন অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার হলে তার জন্য ন্যাটোর জোটকে দায়ী করবে রাশিয়া। পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কার মাঝেই এবার পুতিনের এই ভারত সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।