সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্ভবত গোটা পৃথিবীতে তার কোনও জুড়িদার নেই। সে নিঃসঙ্গ। কেনিয়ার (Kenya) বাসিন্দা সাদা জিরাফকে (White giraffe) চোরাশিকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে তাই তৎপর ইসাকবিনি হিরোলা সংরক্ষিত এলাকার বনকর্মীরা। বিশ্বের বিরলতম এই প্রাণীকে বাঁচিয়ে রাখতে তার শরীরে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে একটি জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস।
কয়েক মাস আগেও কিন্তু এতটা একা ছিল না ধবধবে সাদা এই জিরাফটি। কেনিয়ার ওই জঙ্গলে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সবশুদ্ধ তিনটি সাদা জিরাফ। আচমকাই দু’টি জিরাফ নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে মার্চ মাসে পাওয়া যায় তাদের কঙ্কাল। তখনই বোঝা যায় অন্তত চার মাস আগে ওই স্ত্রী সাদা জিরাফ এবং তার শাবকটিকে হত্যা করেছে চোরা শিকারীরা। স্ত্রী জিরাফটি মারা যাওয়ার পরেই নিশ্চিত হয়ে যায় পৃথিবীতে আর কোনো সাদা জিরাফের জন্ম হবে না। পুরুষ জিরাফটি তারপর থেকে একেবারেই একলা হয়ে পড়ে।
[আরও পড়ুন: ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ! দিওয়ালিতে যথেচ্ছ বাজি পোড়ানোয় রেকর্ড দূষণ দিল্লিতে]
এই পরিস্থিতিতে পৃথিবীর একমাত্র জীবিত সাদা জিরাফটিকে বাঁচিয়ে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বন দপ্তরের কর্মীরা। তার ভোঁতা শিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে একটি জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস। এর সাহায্যেই সারাক্ষণ তারা গতিবিধি নজরে রাখা হবে। প্রতি এক ঘণ্টায় পিং করে সমস্ত নিরাপত্তা কর্মীদের নিজের উপস্থিতি জানান দেবে যন্ত্রটি। কোনও অনিয়ম দেখলেই সতর্ক হয়ে যাবেন কর্মীরা। নেবেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
২০১৭ সালে প্রথমবার এই বিরল প্রজাতির জিরাফের কথা জানা যায়। জিরাফ পরিবারটিকে নিয়ে তৈরি হয় একটি তথ্যচিত্র। তারপর থেকেই তাদের দেখতে ভিড় জমাতে থাকেন পর্যটকরা। জিনের সমস্যার কারণেই এই জিরাফদের রং সাদা। আসলে তাদের শরীরে কোনও স্বাভাবিক রংই তৈরি হয় না। আর এই বিরল রঙের শরীরের জন্যই চোরা শিকারীদের কাছে তাদের দরও বেশি।
[আরও পড়ুন: রাসায়নিক মিশে রক্তবর্ণ রাশিয়ার নদী! দূষণের নমুনা দেখে আতঙ্কিত পরিবেশ বিজ্ঞানীরা]
প্রসঙ্গত, চোরা শিকারীদের দাপটের কারণে পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বহু প্রাণী। নানা সতর্কতাতেও কাজ হয়নি। তাই পৃথিবীর শেষ সাদা জিরাফটিকে বাঁচিয়ে রাথাও যে বড় চ্যালেঞ্জের হতে চলেছে তাতে সন্দেহ নেই।