জ্যোতি চক্রবর্তী, বসিরহাট: আমফানে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট। এটা শতাব্দীর নিদারুণতম বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার বসিরহাটের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবন লাগোয়া হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি ১ ও ২নং ব্লক, হাসনাবাদ ও মিনাখাঁর বিপর্যস্ত ছবি দেখে কার্যত হতাশ তিনি। তবে হাল না ছেড়ে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন।
এদিন দুপুরে বসিরহাট মহকুমা শাসকের দপ্তরে প্রশাসনিক বৈঠক করতে যান রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের যুগ্ম সচিব সৌমেন বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগণার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী, বসিরহাটের পুলিশ সুপার কংকর প্রসাদ বারুই, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বীণা মণ্ডল ও বসিরহাটের মহকুমার শাসক বিবেক ভস্মে-সহ জেলার স্বাস্থ্য, সেচ ও পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকরা। সেসব খতিয়ে দেখে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বিপর্যয় শতাব্দীর নিদারুণতম বিপর্যয়। এটা আপনিও জানেন আমিও জানি। ইতিমধ্যে বসিরহাট মহকুমার পাঁচটি ব্লকের প্রায় ৫০০টি এলাকায় নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর জন্য ১১লক্ষ জলের পাউচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত শুকনো খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না পরিযায়ী শ্রমিকরা, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে পথ অবরোধ হাওড়ায়]
আগামী ৩রা জুনের অর্থাৎ ভরা কোটালের মধ্যে এই এলাকার জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব। যেখানে জল সরবরাহ নেই সেখানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। ইতিমধ্যে শহর বসিরহাট, টাকির মতো পৌরসভাগুলিতে বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সমস্যার সমাধান হয়েছে। পাশাপাশি বারাসাত থেকে হেমনগর পর্যন্ত প্রায় ১৩০কিলোমিটারের উপর রাস্তায় গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছিল, সেগুলি পরিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। যানবাহন এই মুহূর্তে স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করতে পারছে। ইতিমধ্যে জলে ডুবে ও জলবাহিত রোগে এই মহকুমায় প্রায় শতাধিক গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ধৈর্যচ্যুতি, বাগদায় পঞ্চায়েত অফিসের তালা ভেঙে ত্রিপল লুট গ্রামবাসীদের]
স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এদিন স্বরাষ্ট্রসচিবকে জানিয়েছেন, মহকুমা থেকে এখনও ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে, তার জন্য কৃষিঋণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এদিন রাতের মধ্যে কত বাড়ি ক্ষতি হয়েছে, তার চূড়ান্ত তালিকা পেয়ে ধাপে ধাপে সেগুলি মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
The post ‘শতাব্দীর নিদারুণতম বিপর্যয়’, বসিরহাটে আমফানের ক্ষয়ক্ষতি দেখে মন্তব্য স্বরাষ্ট্রসচিবের appeared first on Sangbad Pratidin.