সংবাদ প্রতিদদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস।’ মাওয়ের কথা মেনেই সীমান্তে বারবার আগ্রাসী হয়েছে চিন। লাদাখ থেকে শুরু করে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত ভারতীয় ভূখণ্ডে দু’পা এগিয়ে এক পা পিছিয়ে যাওয়ার ‘সালামি স্লাইসিং’ নীতি নিয়েছে লালফৌজ। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতীয় ভূখণ্ডে আগ্রাসনে অভিযুক্ত তিন সেনানায়কের পদোন্নতি নিয়ে জল্পনা তৈরি করেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
শনিবার তৃতীয়বারের জন্য চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (China Communist Party) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শি জিনপিং। এর ফলে আরও পাঁচ বছরের জন্য সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের রাশও থাকবে তাঁরই হাতে। এহেন পরিস্থিতিতে দল ও সেনাবাহিনীর ক্ষমতা হাতে নিয়ে আগামী পাঁচ বছরের জন্য চিনের গতিপথ নির্ধারিত করে দিয়েছেন তিনি। তাইওয়ান (Taiwan) নিয়ে সুর চড়িয়ে লাদাখেও চিনা ফৌজের আগ্রাসনের ইঙ্গিত দিয়েছেন জিনপিং। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রবিবার লালফৌজের তিনজন জেনারেলের পদোন্নতির কথা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট জিনপিং। তাঁরা হলেন– হে ওয়েইডং, ওয়াং হাইজিয়াং, শু কিলিং। এই তিন সেনানায়কই লালফৌজের ‘ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড’-এর গুরুত্বপূর্ণ পদ সামলেছেন বা সামলাচ্ছেন। বলে রাখা ভাল, ভারত-চিন সীমান্তের (অরুণাচল থেকে লাদাখ) দায়িত্ব রয়েছে এই ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের হাতেই।
[আরও পড়ুন: প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী পেল ইটালি, শপথ নিলেন ‘মুসোলিনিপন্থী’ মেলোনি]
জানা গিয়েছে, বর্তমানে ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের প্রধানের পদে রয়েছেন জেনারেল ওয়াং হাইজিয়াং। ২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে লালফৌজের সংঘাতের পর ২০২১ সালে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এবার হাইজিয়াংকে সিপিসি-র সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য করা হয়েছে। ২০৫ স্থায়ী সদস্যের ওই কমিটি দলীয় নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এদিকে, জেনারেল হে ওয়েইডংকে সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত করেছেন জিনপিং। ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের প্রধান ছিলেন তিনি। তাঁর আমলেই ২০১৭ সালে ডোকলাম নিয়ে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘাতে জড়ায়। একইসঙ্গে, জেনারেল শু কিলিংকেও সেন্ট্রাল কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের অভিজ্ঞতা থাকা জেনারেলদের পদোন্নতি ভারতের জন্য অশনি সংকেত। কারণ, এই পদক্ষেপই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ভবিষ্যতে আরুণাচল ও লাদাখ সীমান্ত নিয়ে বড়সড় কোনও পরিকল্পনা করছেন জিনপিং। ফলে আরও একটা গালওয়ান বা ডোকলাম ঘটে যাওয়া তাই আপাতত ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তিনি। দল ও সেনার অন্দরে দুর্নীতি দমনের নামে বিরোধের কোণঠাসা করে ফেলেছেন জিনপিং। তাই তাঁর নীল নকশায় আপাতত বাধা দেওয়ার মতো কেউ নেই।