দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: একে একে প্রায় ৩৫ জন। প্রলোভন দেখিয়ে মহিলাদের বিয়ে (Marriage), বহু মহিলার সঙ্গে সহবাসের অভিযোগ। রাকেশ রায়চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল সিঙ্গুর থানার পুলিশ। রাকেশেরই এক স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গুর (Singur)থানার পুলিশের হাতে বিধাননগরের এক হোটেল থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে। ধৃতকে চন্দননগর মহকুমা আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত রাকেশের বাড়ি জলপাইগুড়িতে। ফেসবুকের (Facebook) মাধ্যমে রাকেশের সঙ্গে বহু মহিলার পরিচয় হয়। সেইসব মহিলাদের কারও কাছে সে নিজেকে সরকারি চাকুরে, আবার কারও কাছে পর্যটন ব্যবসার মালিক বলে পরিচয় দিত। ধীরে ধীরে মহিলারা রাকেশের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়লে তাঁদের নানারকম প্রলোভন দেখাত। সরাসরি বিয়ের প্রস্তাবও দিত। একসময় রাকেশের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ওই সব তরুণীরা তার প্রস্তাবে সায় দিয়ে বিয়েতে রাজিও হতেন। এরপর রাকেশ তাঁদের কাউকে বিয়ে করত। আবার কাউকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করত। বিয়ের জায়গাও ছিল ভিন্ন ভিন্ন।
[আরও পড়ুন: এবার শিশির এবং দিব্যেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তা ‘প্রত্যাহার’ রাজ্য সরকারের]
এভাবেই দমদমের এক তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে রাকেশের পরিচয় হয়। ওই তরুণীকে সে নিজে একটি বড় পর্যটন সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর বলে পরিচয় দেয়। ক্রমেই দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর রাকেশ তাঁকে সিঙ্গুরে নিয়ে এসে পাতানো আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে সেই তরুণীকে বিয়ে করে। সিঙ্গুরেই ঘর ভাড়া করে ওই তরুণীকে নিয়ে মাস দেড়েক থাকে। কিন্তু ওই তরুণী জানতে পারে, রাকেশ এর আগেও বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছে এবং বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বহু মহিলার সঙ্গে সে সহবাস করেছে। রাকেশের মুখোশ খুলে যাওয়ার পরই ওই তরুণীর উপর অত্যাচার শুরু হয়। এরপরই তরুণী সিঙ্গুর থানার দ্বারস্থ হয়ে রাকেশের বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ে ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বহু মহিলার সঙ্গে সহবাস করার অভিযোগ দায়ের করেন।
[আরও পড়ুন: করোনামুক্তির পরও শেষরক্ষা হল না, প্রয়াত নলহাটির প্রাক্তন বিধায়ক মইনুদ্দিন শামস]
সিঙ্গুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে, রাকেশের বিরুদ্ধে কলকাতা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন থানায় অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন মহিলার সঙ্গে সহবাস করেছে রাকেশ। একটি ধর্ষণ মামলায় সে এক বছর জেলও খেটেছে। ধৃত কখনওই এক জায়গায় বেশিদিন থাকত না। সিঙ্গুর থানার পুলিশ তদন্তে নেমে মোবাইলের সূত্র ধরে গভীর রাতে বিধাননগরের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ রাকেশের অন্যান্য কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখছে।