অর্ণব দাস, বারাসত: জন্ম থেকে স্কুল পেরিয়ে কলেজ, গোবরডাঙার চ্যাটার্জিপাড়াতেই কেটেছে তাঁর জীবন। কর্মসূত্রে বিগত ১৪ বছর ধরে সুদূর তুরস্কের বাসিন্দা হলেও পুরনো পাড়াতেই মন পড়ে রয়েছে রোমিও নাথের। করোনা (Coronavirus) অতিমারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের অবস্থা দেখে আর সামলাতে পারেননি নিজেকে। খেয়াল হয়, যে কোনওভাবে হোক, এই কঠিন দুঃসময়ে মাতৃভূমির পাশে দাঁড়াতেই হবে। সেই ভাবনা থেকেই ভালবাসার গোবরডাঙার জন্য তুরস্ক থেকে চারটি অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাঠালেন রোমিও।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি যোগা সেন্টারের মালিক রোমিও। বিয়ে করেছেন ইস্তাম্বুলের তরুণীকেই। দূরদেশে থাকলেও করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত দেশের খোঁজ রেখেছেন গোবরডাঙার বাসিন্দা বাবা শ্যামল নাথ এবং মা শেফালি নাথের কাছ থেকে। মা-বাবা ও ভাইয়ের কাছ থেকেই তিনি জানতে পারেন, কীভাবে দেশে অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিন শয়ে শয়ে মানুষ শ্বাসকষ্টে মারা যাচ্ছেন। গোবরডাঙাতেও অক্সিজেনের হাহাকার তৈরি হয়েছে বলে জানতে পারেন তিনি। এরপরই আর কালক্ষেপ না করে অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর (Oxygen Concentrator) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সোমবার বিমানবন্দর থেকে রোমিওর পরিবার কনসেন্ট্রেটরগুলি সংগ্রহ করে এদিনই তুলে দেন গোবরডাঙা পুরসভা কর্তৃপক্ষের হাতে।
[আরও পড়ুন: এবার সেফ হোমে বদলে যাচ্ছে রাজ্যের স্কুলগুলি, নয়া সিদ্ধান্ত শিক্ষা দপ্তরের]
রোমিওর এই মানবিক উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। এই বিষয়ে পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য শংকর দত্ত বলেন, “রোমিও ইস্তাম্বুলে থেকেও এই অতিমারী পরিস্থিতিতে গোবরডাঙার মানুষের জন্য যা করেছেন তার জন্য কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। পুরসভার পক্ষ থেকে এই অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরগুলো আক্রান্তদের সেবার কাজে ব্যবহার করতে পারব।” এদিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইস্তাম্বুলে বসেই এক ভিডিও বার্তায় রোমিও বলেন, “খুব দ্রুত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন গোবরডাঙার মানুষ। আমার শুভেচ্ছা আপনাদের সঙ্গে আছে এবং আমি সব সময়ই আপনাদের পাশে থাকব।”