সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কী হতে চলেছে শীতের মরশুমে? যুদ্ধক্ষেত্রে কি আসতে চলেছে বড়সড় কোনও মোড়? এসব প্রশ্ন উসকে দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সোমবার দেশের ফৌজকে ‘প্রস্তুত’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই তুঙ্গে জল্পনা।
রয়র্টাস সূ্ত্রে খবর, শীতের মরসুমে নতুন করে বিধ্বংসী হামলা চালাতে পারে রাশিয়া বলে আশঙ্কা করছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার তিনি দেশবাসীর উদ্দেশে এক বক্তৃতায় বলেন, “বিদ্যুতের সরবরাহ কম থাকায় আমাদের সকলকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।” দেশবাসীর উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় কমেডিয়ান থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে উঠা জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy ) আরও বলেন, “আমরা জানি ওই সন্ত্রাসবাদীরা (রাশিয়া) লতুন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যতদিন ওদের মিসাইল শেষ না হচ্ছে ওরা হামলা চালিয়ে যাবে। তবে আমাদের বাহিনী তৈরি আছে। গোটা দেশ তৈরি।”
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে মরক্কোর বিরুদ্ধে হার বেলজিয়ামের, রাতভর দাঙ্গা ব্রাসেলসে, আটক বহু]
গত কয়েক মাসে ইউক্রেন সেনার পালটা মারে খেরসন, মাইকোলিভ এবং উত্তর-পূর্বে খারকভ-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে রুশ বাহিনী। জাপরজাই পরমাণু কেন্দ্র থেকেও সেনা সরাতে চলেছে মস্কো বলে খবর। সম্প্রতি, পেন্টাগনের প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দাবি করা হয় যে যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত লক্ষাধিক রুশ সেনা হতাহত হয়েছে। তাই মরিয়া হয়ে উঠেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধে রাশিয়ার (Russia) অন্যতম অস্ত্র হচ্ছে শীত। এখন কিয়েভে তাপমাত্রা শূন্যের নিচে। ফলে ঘর গরম রাখতে ও জলের পাইপগুলিকে সচল রাখতে বিদ্যুতের প্রয়োজন। সেই দুর্বল জায়গাতেই আঘাত করছে রাশিয়া। ফলে ইউক্রেনের প্রায় এক কোটি বাসিন্দা বিদ্যুৎ সঙ্কটের মুখে পড়েছেন। এভাবে জনতার মনোবল ভাঙতে চাইছে পুতিন বাহিনী। শুধু তাই নয়, ঠান্ডায় ইউক্রেনীয় বাহিনীকে ঘিরে ফেলার একটি পরিকল্পনাও করছে রুশ সেনা। নতুন করে সামরিক অভিযান নিয়ে জেলেনস্কিদের সতর্ক করে অনেকেই বলছে, ঠান্ডার জেরেই নেপোলিয়নকে রাশিয়ার সঙ্গে লড়াই হারতে হয়েছিল। একইভাবে ‘জেনারেল উইন্টার’-এর দাপটে বিপর্যস্ত হয়েছিল নাৎসি বাহিনী। তাই শীতের মরশুমে অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।
রাশিয়ার এই কৌশল বুঝে গত সপ্তাহে জ়েলেনস্কি জানিয়েছিলেন, দেশ জুড়ে বিশেষ আশ্রয় শিবির খোলা হবে। সেখানে বিদ্যুৎ থাকবে, ঘর গরম রাখার ব্যবস্থা থাকবে, জল, ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওষুধ, বিনামূল্যে যন্ত্রপাতি চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। সেই মতো আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দেশগুলির সহায়তায় আশ্রয়শিবির খোলার কাজও শুরু হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন সরকার কত জনের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারবে তা নিয়ে সন্দিহান পশ্চিমী দুনিয়া। এদিকে, গতকাল জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাল্টিক ও নর্ডিক দেশগুলির বেশ কয়েকজন মন্ত্রী।