সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: থর মরুভূমির মাঝখান থেকে বয়ে যেত নদী! তাও আবার ১ লক্ষ ৭২ হাজার বছর আগে। একেবারে প্রস্তরযুগে। শুনতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি গবেষণায় সামনে এসেছে এমনই তথ্য। এর আগেও রাজস্থানের (Rajasthan) থর মরুভূমিতে নদী বয়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু এত প্রাচীন? না এর আগে কোনওদিন সেরকম কিছু প্রকাশ্যে আসেনি। আর তাই তো Quaternary Science Reviews জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় অনেকেই চমকে গিয়েছেন।
জার্মানির The Max Planck Institute for the Science of Human History বিশ্ববিদ্যালয়, তামিলনাড়ুর আন্না বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলকাতার IISER–এই তিন বিশ্ববিদ্যালয় মিলে এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রস্তর যুগে থর মরুভূমির মধ্যবর্তী এলাকায় ছবি আজকের মতো ছিল না। সেসময় অর্থাৎ আজ থেকে ১ লক্ষ ৭২ হাজার বছর আগেও বিকানের (Bikaner) সংলগ্ন নাল কোয়েরি এলাকা দিয়ে বয়ে যেত নদী। যেখানে বর্তমানে বিকানের থেকে অন্তত ২০০ কিলোমিটার দূরে নদী বইছে। মরুভূমি নয়, চারিদিকে তখন ছিল উর্বর জমিও। আফ্রিকা থেকে আসা হোমো সেপিয়েন্সরা বাসস্থানও গড়েছিল এখানে। সেখান থেকে পরবর্তী সময়ে তাঁরা আশপাশে ছড়িয়ে গিয়েছিল। এমনটাই দাবি করা হয়েছে ওই গবেষণাপত্রে।
[আরও পড়ুন: হাতির ‘হত্যাকারী’ ট্রেন, রেলকে ‘শিক্ষা দিতে’ ইঞ্জিন বাজেয়াপ্ত করল অসমের বনদপ্তর]
জানা গিয়েছে, প্রথমে মহাকাশ থেকে তোলা থর মরুভূমির (Thar Desert) একাধিক চিত্র নিয়েই শুরু হয়েছিল বিস্তারিত গবেষণা। তাতে দেখা যায়, একাধিক রেখা লক্ষ্য করেন গবেষকরা। ভালভাবে পরীক্ষার পর তাঁরা বুঝতে পারেন, সেটি আসলে নদীর গতিপথ। এরপরই ওই এলাকায় গিয়ে গবেষণা শুরু করেন তাঁরা। দেখা যায়, ওই নদীতে জলের প্রবাহ ১ লক্ষ ৭২ হাজার বছর আগে সর্বোচ্চ ছিল। সেসময় এই এলাকায় বৃষ্টিপাত আরও কম হত। কিন্তু নদীর জলের কারণে অসুবিধায় পড়তে হত না। ৯৫ থেকে ৭৮ হাজার বছর আগেও এই এলাকা দিয়ে নদী বহমান ছিল। তারপরই তা শুকিয়ে যেতে থাকে।
[আরও পড়ুন: বাঙালি বিজ্ঞানীর নকশায় ব্রহ্মাণ্ডের রহস্য ভেদ, গ্রহাণু থেকে নুড়ি কুড়িয়ে নিল নাসার মহকাশযান]
গবেষকদের দাবি, থর মরুভূমি এলাকায় ঠিকমতো সন্ধান করলে প্রস্তরযুগের সভ্যতার আরও অনেক প্রমাণ উঠে আসবে। ঠিক যেমন সামনে এসেছে এই নদীটির ইতিহাস।