নিজস্ব সংবাদদাতা, তমলুক: লোকসভা ভোটের প্রচারে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmir Bhandar) প্রকল্প নিয়ে বিজেপির টিপ্পনী কম কিছু নয়। অথচ একেবারেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিজেপির এক বুথ সভাপতি-সহ প্রায় ১২ জন পুরুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকায়! এমনই অভিযোগে তদন্তে নেমে মঙ্গলবার বিকেলে ময়না থেকে বিজেপির বুথ সভাপতি-সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করল খানাকুল থানার পুলিশ।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ হরকুলি গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির বুথ সভাপতি অশোক দাস। তঁারই ছেলে শ্রীকান্ত দাস। শ্রীকান্ত একটি এজেন্সির মাধ্যমে প্রশাসনিক স্তরে ভোটার কার্ড, আধার কার্ডের ডেটা অপারেটিংয়ের কাজ করতেন। বিভিন্ন সরকারি অফিসে বরাত পাওয়া ওই সংস্থা পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, হুগলি জেলায় শ্রীকান্তকে পাঠাত। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে ময়নার ওই যুবক হুগলির খানাকুল-২ ব্লকের বিডিও-র লগইন ব্যবহার করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে জালিয়াতি করেছেন বলে অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: হাই কোর্টে ধাক্কা, ইডির গ্রেপ্তারির বিরোধিতায় এবার সুপ্রিম কোর্টে কেজরি]
ঘটনার রহস্যভেদে আগেই ময়নার অভিযুক্ত শ্রীকান্তকে দীর্ঘক্ষণ ধরে জেরা করেন ময়নার বিডিও সমীর পান। জেরায় শ্রীকান্ত জানান, খানাকুল-২ ব্লকে দুয়ারে সরকারের কর্মসূচিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদনকারীদের নাম, নথিপত্রের সঙ্গে ময়নার বাসিন্দাদের অ্যাকাউন্ট নম্বর জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে নাম ও ঠিকানা খানাকুলের বাসিন্দা মহিলাদের হলেও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মাসোহারা বাড়িতে বসেই পাচ্ছিলেন বিজেপির বুথ সভাপতি-সহ ময়নার পুরুষ বাসিন্দারা। খানাকুলের বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন বিকেলে ময়না থেকে বিজেপির বুথ সভাপতি অশোক দাস, সনাতন জানা, গোপাল জানা-সহ মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও মূল অভিযুক্ত শ্রীকান্ত-সহ বাকিরা পলাতক। দিনকয়েক আগেই কারচুপির বিষয় নজরে আসে খানাকুল ব্লক প্রশাসনের। সেইমতো ওই ১২ জনের অ্যাকাউন্ট নম্বর বাদ পড়ে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল জানান, ‘‘এটা আসলে তৃণমূলের ষড়যন্ত্র।’’