সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রবল শীতে কাঁপছে বাংলাদেশ। দেশজুড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। ইতিমধ্যে শীতজনিত অসুস্থতার কারণে রংপুর মেডিক্যালে এক সপ্তাহে ১৫ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশের পশ্চিমের জেলা যশোরে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আরও কয়েকদিন গোটা দেশে এমন তীব্র ঠান্ডা থাকবে।
আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিক ড. মহম্মদ আবুলকালাম মল্লিক এই সমস্ত তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “উচ্চচাপ বলয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ জুড়ে অবস্থান করছে। ফলে উত্তর-পশ্চিম থেকে হিমেল বাতাস বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে প্রবাহিত হওয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়। কয়েকদিন মধ্যরাত থেকে দীর্ঘ সময় ধরে কুয়াশা রয়েছে। দিনে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করতে পারে না। গড় তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণে ঠান্ডার তীব্রতা রয়েছে। দিনের চেয়ে রাত বড় হওয়ায় রাতে অনেকক্ষণ ধরে ঠান্ডা পড়ে। ঘন কুয়াশা ও বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কম থাকার কারণে শীতের অনুভূতির তীব্রতা আছে।”
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিমানবন্দর তৈরিতে আগ্রহী ভারত, চিনকে ঠেকাতে কৌশলী দিল্লি?]
এদিকে দেশের উত্তরের জেলা রংপুরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হচ্ছে। ভরতি হওয়া শিশুদের মধ্য থেকে এক সপ্তাহে ১৫ শিশু ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। যা সপ্তাহে স্বাভাবিক মৃত্যুর চেয়ে দ্বিগুণ। এদের বয়স এক মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে। হাসপাতালের শিশু বিভাগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স শিখলি খাতুন বলেন, “শীতজনিত রোগে শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশু ভরতি করা হয়েছে।”
আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলি হিমশিম খাচ্ছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায়, প্রতিটি শয্যায় একাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। শয্যা না পেয়ে অনেক শিশুকে মেঝেতে বিছানা পেতে রাখা হয়েছে। কোনও কোনও শয্যায় মায়েরা তাঁদের অসুস্থ শিশুসন্তান নিয়ে বসে আছেন। শিশুদের সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের ভিড়ে নার্স ও চিকিৎসকেরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।