স্টাফ রিপোর্টার: বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল আপ হাওড়া-মুম্বই মেল। শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ার পরই হাওড়ার বীরশিবপুর স্টেশনের কাছে ২২ কোচের মুম্বই মেলের কাপলিং খুলে দুটি কোচ নিয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় ইঞ্জিন। কিছু দূর বেসামাল অবস্থায় গিয়ে তীব্র ঝাঁকুনি দিয়ে বাকি ২০টি কোচ দাঁড়িয়ে পড়ে।
একেই অনেকটা দেরিতে ছেড়েছিল ট্রেন। মাঝপথে বহুক্ষণ কেন দাঁড়িয়ে আছে তা বুঝতে পারেনি বিচ্ছিন্ন কামরার যাত্রীরা। অনেক পড়ে তারা ট্রেন থেকে নেমে দেখে ইঞ্জিন ছাড়াই কোচগুলি অন্ধকারে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেছে ভেবে হতচকিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। আতঙ্কে সবাই ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। সেইসময় রেলের আরপিএফের কোনও আধিকারিককে ঘটনাস্থলে না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে যান যাত্রীরা।
অবশ্য কিছু পরে ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পদস্থ কর্তারা। তাঁরা জানান, কাপলিংয়ের সমস্যার জন্যই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। পড়ে থাকা ট্রেনের কোচের আতঙ্কিত যাত্রীরা রাত পর্যন্ত রেললাইনের উপর অপেক্ষা করতে থাকেন। উৎকণ্ঠায় ভুগতে থাকেন যাত্রীরা। রেল কর্তৃপক্ষ রাত পর্যন্ত যাত্রীদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করতে পারেনি। এই ঘটনায় রেলের আধিকারিকদের ঘিরে ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা।
[আরও পড়ুন: ‘ভালো লাগল’, তৃণমূলের ধরনা হঠিয়ে বিচারপতি মান্থার ‘গুড বুকে’ পুলিশ]
তাদের অভিযোগ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। হাওড়াতে ট্রেন ছাড়ার আগেই কোনও গোলযোগ ধরা পড়ে থাকতে পারে। সেইজন্যই ট্রেন ছাড়তে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরি হয়। তবু ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চালানো হয়েছিল। ট্রেনটি লাইনচ্যুত হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যাত্রীদের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। কোনওক্রমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। বস্তুত, এই ঘটনায় যাত্রী সুরক্ষায় রেলের নিরাপত্তার গাফিলতিই ফের একবার সামনে চলে এল।
বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার ৬ মাসের মধ্যে এটি ষষ্ঠ বড় দুর্ঘটনা। ২ জুন বালেশ্বরের করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ২৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২৬ আগস্ট মাদুরাইয়ের ট্রেনে গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে মৃত্যু হয় ৪ জনের। ১১ অক্টোবর বিহারের বক্সারে দিল্লি-কামাখ্যা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় ৫ জন, ২৯ অক্টোবর বিশাখাপত্তনমে দুটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। রেলে দুর্ঘটনার ধারাবাহিকতা চলছেই। এদিন কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তার সদুত্তর রেলের তরফে রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনার জেরে হাওড়া-খড়গপুর আপ লাইনে দীর্ঘক্ষণ ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।