সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের হাল ফেরাতে নাকি সেনাশাসন জারি হয়েছে মায়ানমারে! অথচ সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে পথে নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। সেই আন্দোলনকে দমাতে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে শনিবার ফের এলোপাথারি গুলি ছুঁড়ল মায়ানমারের সেনা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। জখম কমপক্ষে ৩০ জন।
এদিন আচমকাই মান্দালয় শহরের বন্দরের কাছে প্রচুর পুলিশ ও সেনাকর্মীরা জড়ো হয়। উল্লেখ্য, ক্যু বিরোধীরা ওই এলাকায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। হঠাৎই পুলিশ-সেনাকর্মী জমায়েত করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মান্দালয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে, এই আতঙ্কে ঘরের ভিতর থেকে পুলিশ ও সেনাকর্মীদের লক্ষ্য করে বাসনপত্র ছুঁড়তে শুরু করে। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে বিক্ষোভকারীরাও। পালটা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশ ও সেনা। তাজা কার্তুজের পাশাপাশি রাবার বুলেটও ছোঁড়া হয়।
[আরও পড়ুন : চিনের সঙ্গে কড়া টক্কর হতে চলেছে, বেজিংয়ের অভিসন্ধি সাফ করে হুঁশিয়ারি বাইডেনের]
মান্দালয়ের জরুরীভিত্তিক উদ্ধারকারী দলের প্রধান হ্ল্যাইং মিন উ জানান, সেনা ও পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে দুজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।তাঁদের মধ্যে একজন নাবালক রয়েছে। জখম অন্তত ৩০ জন। তাঁদের শরীরে রবার বুলেটের আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। সূত্রের খবর, এদিন রেডক্রসের গাড়িতেও হামলা হয় মান্দালয়ে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলর আং সান সু কি ও গণতান্ত্রিক সরকারের প্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। এক বছরের জন্য দেশে জারি হয় জরুরি অবস্থা।মায়ানমারে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে অহিংস প্রতিবাদের অধিকার সবই কেড়ে নিয়েছে সামরিক জুন্টা। তারপর থেকেই রাজধানী নাইপিদাও ও ইয়াঙ্গন-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে গণবিক্ষোভ। প্রতিবাদের আগুন যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়ে তাই দেশজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাশ টেনেছে দেশের সেনা। কিন্তু এতকিছুর পরও রাস্তায় নেমে সু কি’র মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে মানুষ। এই আন্দোলনকে দমনের আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা প্রশাসন। উল্লেখ্য, সেনার গুলিতে বৃহস্পতিবারই এক আন্দোলরত যুবতীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও দুজনের মৃত্যু হল।